০৬:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

একটি খালের বাঁধ ৫ গ্রামের মানুষের গলার ফাঁস

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খালে বাঁধ দেওয়ায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় পাঁচ গ্রামের মানুষ।  গত দু’বছর ধরে ওই খালের এক দিকে বাঁধ থাকায় বাঁধের এক প্রান্ত দিয়ে পানি চলাচল না করায় ভরাট হয়ে গেছে। অপরদিকে পানির চাপে চার কিলোমিটার জুড়ে রাস্তাঘাট বাড়ি বাগান খালেই ভেঙে যাচ্ছে। দুই বছর ধরে এ অবস্থা চললেও এর কোন প্রতিকার নেই। বাঁধটি এখন ইন্দুরকানী, কালাইয়া, ঢেপসাবুনিয়া, সাঊদখালী ও ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এ খাল উত্তর দিকে উত্তর ইন্দুরকানী গ্রামের বলেশ্বর নদী এবং দক্ষিণ দিকে কালাইয়া ও সাউদখালী গ্রামের মধ্য দিয়ে কচা নদীতে পড়েছে। কিন্তু খালের দক্ষিণ প্রান্তের কচা নদী থেকে এক কিলোমিটার দুরে একটি সেতু নির্মাণের অজুহাতে গত ২০১৯ সালের শেষের দিকে ওই খালে বাঁধ দেওয়া হয়। এতে দক্ষিণ দিকে পানি চলাচলসহ মানুষের যাতায়াতও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

 

স্থানীয়রা জানান, এভাবে খালের একদিকে বাঁধ থাকায় অন্য শাখা খাল- মাঝির খাল, কালাইয়ার খালসহ তিনটি খালের পানি উত্তর দিকে উত্তর ইন্দুরকানী খাল দিয়ে বলেশ্বর নদীতে নামায় খালের দু-পাশ, রাস্তা, বাগান বাড়ি ভেঙে যাচ্ছে। একই সাথে পানির স্রোতে খালটি আট থেকে দশ ফুট গভীর হয়ে গেছে। বাঁধ কেটে দিলে দুইদিক থেকে পানি নামলে দুই পাশের মানুষই সুবিধা পেতো। তেমনি ভাঙনের কবল থেকেও রক্ষা পেতো স্থানীয় বাগান ও ঘর-বাড়ি।

উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামে গিয়ে দেখা যায় খালে বিশাল আকারে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও গত এক বছর ধরে তার কাজ বন্ধ রয়েছে। বাঁধের দক্ষিণ দিকে কোনো পানি নেই। ভরাট হয়ে গেছে। দুই বছর ধরে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বাঁধের পাশের দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এখানে অকারণে একটি বাঁধ থাকায় আমরা শুকনা মৌসুমে পানি পাই না, আবার বর্ষা মৌসুমে পানি নামতে না পারায় স্থানীয় বাড়ি-ঘরের পানি জমে আমরা প্লাবিত হয়ে যাই।

খালের উত্তর প্রান্তের সাবেক ইউপি সদস্য আ. রশিদ মাতুব্বর জানান, খালের দক্ষিণ দিকে বাঁধ থাকায় তিনটি খালের পানি একদিক থেকে নামায় চার কিলোমিটার ধরে রাস্তা খালেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত খালের বাঁধ কাটাসহ উত্তর দিকে স্লুইজ গেট দেওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয় ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ করীম ইমন তালুকদার জানান, খালে বাঁধ থাকায় একদিকে পানি নামায় রাস্তঘাট ভেঙে যাচ্ছে। এসমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলে খালের  উত্তর প্রান্তে স্লুইজ গেট ও দক্ষিণ প্রান্ত খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা এলজিইডির উপ-প্রকৌশলী রবীন্দ্রনাথ হালদার জানান, ওই খালের দক্ষিণ দিকের সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে, তাই জনসাধারণের সুবিধার্থে বাঁধ ছোট করে কেটে দিলে পানি উঠতে নামতে পারবে। তিনি এলাকাবাসীকে বাঁধ কেটে দিতে বলেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

একটি খালের বাঁধ ৫ গ্রামের মানুষের গলার ফাঁস

প্রকাশিত : ০৪:০২:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খালে বাঁধ দেওয়ায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় পাঁচ গ্রামের মানুষ।  গত দু’বছর ধরে ওই খালের এক দিকে বাঁধ থাকায় বাঁধের এক প্রান্ত দিয়ে পানি চলাচল না করায় ভরাট হয়ে গেছে। অপরদিকে পানির চাপে চার কিলোমিটার জুড়ে রাস্তাঘাট বাড়ি বাগান খালেই ভেঙে যাচ্ছে। দুই বছর ধরে এ অবস্থা চললেও এর কোন প্রতিকার নেই। বাঁধটি এখন ইন্দুরকানী, কালাইয়া, ঢেপসাবুনিয়া, সাঊদখালী ও ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এ খাল উত্তর দিকে উত্তর ইন্দুরকানী গ্রামের বলেশ্বর নদী এবং দক্ষিণ দিকে কালাইয়া ও সাউদখালী গ্রামের মধ্য দিয়ে কচা নদীতে পড়েছে। কিন্তু খালের দক্ষিণ প্রান্তের কচা নদী থেকে এক কিলোমিটার দুরে একটি সেতু নির্মাণের অজুহাতে গত ২০১৯ সালের শেষের দিকে ওই খালে বাঁধ দেওয়া হয়। এতে দক্ষিণ দিকে পানি চলাচলসহ মানুষের যাতায়াতও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

 

স্থানীয়রা জানান, এভাবে খালের একদিকে বাঁধ থাকায় অন্য শাখা খাল- মাঝির খাল, কালাইয়ার খালসহ তিনটি খালের পানি উত্তর দিকে উত্তর ইন্দুরকানী খাল দিয়ে বলেশ্বর নদীতে নামায় খালের দু-পাশ, রাস্তা, বাগান বাড়ি ভেঙে যাচ্ছে। একই সাথে পানির স্রোতে খালটি আট থেকে দশ ফুট গভীর হয়ে গেছে। বাঁধ কেটে দিলে দুইদিক থেকে পানি নামলে দুই পাশের মানুষই সুবিধা পেতো। তেমনি ভাঙনের কবল থেকেও রক্ষা পেতো স্থানীয় বাগান ও ঘর-বাড়ি।

উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামে গিয়ে দেখা যায় খালে বিশাল আকারে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও গত এক বছর ধরে তার কাজ বন্ধ রয়েছে। বাঁধের দক্ষিণ দিকে কোনো পানি নেই। ভরাট হয়ে গেছে। দুই বছর ধরে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বাঁধের পাশের দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এখানে অকারণে একটি বাঁধ থাকায় আমরা শুকনা মৌসুমে পানি পাই না, আবার বর্ষা মৌসুমে পানি নামতে না পারায় স্থানীয় বাড়ি-ঘরের পানি জমে আমরা প্লাবিত হয়ে যাই।

খালের উত্তর প্রান্তের সাবেক ইউপি সদস্য আ. রশিদ মাতুব্বর জানান, খালের দক্ষিণ দিকে বাঁধ থাকায় তিনটি খালের পানি একদিক থেকে নামায় চার কিলোমিটার ধরে রাস্তা খালেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাই দ্রুত খালের বাঁধ কাটাসহ উত্তর দিকে স্লুইজ গেট দেওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয় ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ করীম ইমন তালুকদার জানান, খালে বাঁধ থাকায় একদিকে পানি নামায় রাস্তঘাট ভেঙে যাচ্ছে। এসমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলে খালের  উত্তর প্রান্তে স্লুইজ গেট ও দক্ষিণ প্রান্ত খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা এলজিইডির উপ-প্রকৌশলী রবীন্দ্রনাথ হালদার জানান, ওই খালের দক্ষিণ দিকের সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে, তাই জনসাধারণের সুবিধার্থে বাঁধ ছোট করে কেটে দিলে পানি উঠতে নামতে পারবে। তিনি এলাকাবাসীকে বাঁধ কেটে দিতে বলেন।