দক্ষিণ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে সরানো হয়েছে এস আলম গ্রুপের ১৪টি বিলাসী গাড়ি। মঙ্গলবার রাতে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিলাসবহুল দামি গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
পুরো বিষয়টি তদারকি করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের ড্রাইভার মনসুর।
শুধু গাড়ি নয়, গাড়ির ভিতরে বিপুল টাকা ছিল বলে ধারণা করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিলাশী এসব গাড়ি বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি ব্যান্ডের। এস আলমের প্রতিষ্ঠান থেকে বের করা গাড়িগুলোর গন্তব্য কোথায় সেটা নিশ্চিত করে কেউ জানাতে পারেনি। যদিও গাড়িগুলো সীতাকুণ্ডের দিকে রওনা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের মেয়ের শ্বশুর মীর গ্রুপের আবদুস সালাম। আবদুস সালাম জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনামের মামাতো ভাই। বিএনপি নেতাদের দাবি, মীর গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবি করেছিল বিএনপি পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি। সেটা তদারকি করার জন্য মীর গ্রুপে গিয়েছিলেন তারা। তবে এসব বিলাশবহুল গাড়ি বের করা নিয়ে সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি তারা।
জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, এনাম ভাইয়ের মামাত ভাই মীর গ্রুপে কেউ চাঁদা দাবি করেছে। সেজন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এস আলমের গাড়ি কেন আমরা সরাবো? তাদের গাড়ি আমরা কি করবো? আমরা কোনো গাড়ি সরাইনি।
দুর্নীতি-অনিয়মে জর্জরিত এস আলম গ্রুপের কোনো সম্পত্তি না কেনার বিষয়ে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এর পরই নিজেদের অস্থাবর সম্পত্তি গোপনে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছে শিল্প গ্রুপটি। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জারটেক এলাকায় এস আলমের ফ্যাক্টরিতে থাকা ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি গোপনে সরিয়ে নেয়া হয়। এ কাজে এস আলমকে সহযোগিতা করেছে বিএনপি নেতারা। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব পিবলু, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম নয়ন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করছেন, গাড়িগুলোর ভেতরে বিপুল পরিমাণ টাকা ছিল। কারণ শুধু গাড়ি সরানোর জন্য বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সেখানে সশরীর উপস্থিতি ও তদারকি করার কথা নয়।
প্রতিটি গাড়ি একজন করে ড্রাইভারের তত্ত্বাবধানে দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন বিএনপি নেতারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, রাত ১২টার দিকে কিছু লোক এসে একটি একটি করে গাড়ি বের করে। সেখানে বিএনপির নেতারাও উপস্থিত হন। বিলাশী এসব গাড়ি বের করার জন্য সাথে ড্রাইভার ছিলেন। শুনেছি, গাড়িগুলো সীতাকুন্ডে যাবে। শুধু গাড়ি নেয়ার জন্য ড্রাইভারের সাথে বড় বড় নেতারা আসার কথা নয়। গাড়িতে টাকা পয়সাও ছিল থাকতে পারে। নিরাপত্তার জন্য নেতাদের সেখানে রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম বলেন, আমরা গিয়েছিলাম কালুরঘাট পেপার মিলে। সেখানে আমার মামাত ভাই মীর গ্রুপের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাদের কাছে বিএনপির কেউ চাঁদা দাবি করেছিল, আমরা যাওয়ার পরে সেখানে কেউ আসেনি। আমার মামাত ভাইয়ের নাম সালাম, সেটাকে কেউ হয়তো এস আলম বানিয়ে ফেলছেন। আমাদের রাজনৈতিক অনেক শত্রু আছে, কেউ এগুলো করছে।
বিলাশী এসব গাড়ির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিলে বলেন, আমরা তো গাড়ি ছাড়া নয়। আমাদের সবার তো গাড়ি আছে।
বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ






















