বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমাদের আর পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। পলাতক স্বৈরাচার জাতীয় জীবনের ১৫টি বছর কেড়ে নিয়েছে। সেই দুঃস্বপ্নকে দূরে ঠেলে দেশের জনগণের সামনে একটি বৈষম্যহীন নিরাপদ মানবিক বাংলাদেশ গড়া বিএনপির আগামী দিনের লক্ষ্য।’
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুায়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে, তথ্য প্রযুক্তির বর্তমান বিশ্বে কথামালার রাজনীতির পরিবর্তে বর্তমান প্রজন্ম প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে চায়। সমৃদ্ধি-সম্মান এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত দেখতে চায়। এজন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতির কাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং কর্মক্ষম জনশক্তির সামনে সম্ভাবনার সব দরজা উন্মুক্ত করে দিতে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারাই বিএনপির প্রাণ। শত নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা-মামলা, হয়রানির শিকার হয়েও আপনারা জাতীয়তাবাদের আদর্শ বিচ্যুত হননি। আমি জানি, অতীতে বছরের পর বছর ধরে আপনাদের অনেকে মাফিয়া সরকার এবং তাদের দোসরদের দ্বারা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপনাদের প্রতি আমার একটি অনুরোধ, অতীতে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণে আপনারা কেউ প্রতিশোধ পরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। অন্যায়-অবিচারের শিকার হলে আইনগত পদক্ষেপ নিন। তবে খেয়াল রাখবেন, কেউ যেন হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দল বিএনপি মনে করে— জনগণের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংস্কারের বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রীয় সংস্কারের কার্যক্রমগুলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে হলে সেটি বেশি কার্যকর বলে জনগণ বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক বিশ্বেও এটি স্বীকৃত।’
রাষ্ট্র সংস্কারকে কার্যকর করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি এবং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়টিও উপেক্ষা করার সুযোগ নেই বলে মনে করেন তারেক রহমান।
তিনি আরও বলেন, ‘সে লক্ষ্যে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি দলীয় রাজনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি সব মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা, ‘নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমন্বয় করা, পরপর দুই টার্মের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন না করা, ‘উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন, এমনকি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয়ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছ’।
তিনি বলেন, যাদের নেতৃত্বে, যাদের আত্মত্যাগে, যাদের শ্রম ঘাম মেধায় বিএনপি আজ সারা দেশের জনগণের কাছে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভলগ্নে তাদের সবার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
বিজনেস বাংলাদেশ/এমএফ