সিরাজগঞ্জে ৬শ কোটি টাকার প্রস্তাবিত ইপিজেডের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে । এই শিরোনামে বিজনেস বাংলাদেশসহ দেশের একাধিক গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার ( ১৭ জুলাই) একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসকের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই অভিযানে অংশ নেন।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, এখানে কোনো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। আমাদের অভিযান চলমান। তিনি আরও জানান, ডিসি স্যার ইপিজেড নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। আশা করছি, দ্রুতই ইপিজেডের কাজ শুরু হবে।
এর আগে,সিরাজগঞ্জে ৬শ ৩৮কোটি ব্যয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাঁটা ওয়াবধায় বালুভরাট ও বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বাঁধ নির্মাণ ও বালু ভরাট কাজ শেষ করা হলেও জায়গা দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকায় ৬শ কোটি টাকার প্রকল্প দখল হয়ে যাচ্ছে ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১লা জানুয়ারি ৫শ ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজটি শুরু হয়। কয়েক দফা প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ৬শ ৩৮কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে কাজটি শেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পটি সরকারের সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নের বাস্তবায়ন করা হয়।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানা যায়, যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং বাঁধ নির্মাণ করি। এখানে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। প্রকল্পটি জেলা প্রশাসক কর্তৃপক্ষে বুঝিয়ে দিয়েছি। কিন্তু প্রকল্প এলাকায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এসময় জানানো হয়,অনতিবিলম্বে জেলা রাজস্ব সঙ্গে কথা বলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
এর আগে, গত সোমবার ( ৩০ জুন) সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত ছয় মাস আগে জেলা প্রশাসক হল রুমে ইপিজেড ( রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) নিয়ে রেজিলিশন হয় । সভায় সিদ্ধান্ত হয়,
যেহেতু জেলায় সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন আছে। তাই এখানে ইপিজেড ( রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) গড়ে তোলা হবে । এজন্য প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় ও প্ল্যানিং কমিশনে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আরও জানা যায়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি কার্যবিবরণী প্রণায়ণ করা হয়। এর পরবর্তীতে ঢাকাস্থ ইপিজেড কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন, এসময় সিরাজগঞ্জে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে বলে, তারা ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
গড়ে তোলার লক্ষ্যে ও দখল নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) লিটুস লরেন্স চিরান জানান, গত কয়েক মাস আগে ঢাকা থেকে ইপিজেড কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এই জায়গায় সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে বলে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তিনি আরো জানান, এখানে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হলে উত্তরবঙ্গের চার থেকে পাঁচ লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জ ক্রসবার ৩ ও ক্রসবার ৪ এ এই ইপিজেড ( রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) গড়ে তোলা হবে । এজন্য প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় ও প্ল্যানিং কমিশনে একটি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমি তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছি।
ডিএস./