লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় অবৈধভাবে রাসায়নিক সার মজুদ ও বিক্রির সময় অভিযান চালিয়ে ৯ হাজার ৮০ টি বস্তা সার জব্দ এবং ৮ জন সার বিক্রেতাকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) থেকে রোববার (২৬ অক্টোবর) দিন ব্যাপী লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সার বিক্রেতাদের দোকানে পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের নিয়ে পাটগ্রাম উপজেলা প্রশাসন এ অভিযান চালায়।
জানা গেছে, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন সার বিক্রেতারা গোডাউনে ও দোকানে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুদ রেখে বেশি দামে খুচরা বিক্রি করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার দাশ।
এ সময় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুদ ও বেশি দামে খুচরা বিক্রি করার অপরাধে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামগামী সড়ক ও কোটতলী এলাকার মেসার্স ব্রাদার্স ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী হায়দার আলী রাসেলের প্রতিষ্ঠান থেকে ইউরিয়া ১ হাজার ৩ শত বস্তা, পাটগ্রাম বড় মসজিদ সড়ক এলাকার খুচরা সার বিক্রেতা মেসার্স জান্নাত ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মিলন শেখের প্রতিষ্ঠান থেকে ৭ শত বস্তা, আন্তঃজেলা মোড় এলাকার সার বিক্রেতা মনিরুজ্জামান মনুর প্রতিষ্ঠান থেকে ৯ শত ২০ বস্তা, ধবলসুতি এলাকার সার বিক্রেতা মঞ্জুরুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার ৬৩ বস্তা, মুন্সিরহাট এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স পাটোয়ারী ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী ফরিদুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান থেকে ৪ শত ৩৫ বস্তা, ললিতারহাট এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স সুমন ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল হামিদের প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার ১ শত ৩০ বস্তা, একই এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স কাজল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী হাফিজুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান থেকে ২ শত ৫০ বস্তা, একই এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স রাফাত ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রাইসুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ শত ৮৮ টি বস্তা, পাটগ্রাম এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রুবেল ইসলামের প্রতিষ্ঠান থেকে ১১২ বস্তা, সোহাগপুর এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স অন্তর ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল আজিজের প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার ৬ শত ১৩ বস্তা, কদুর বাজার এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স প্রধান ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আল কাওছার বিলাস প্রধানের প্রতিষ্ঠান থেকে ২ শত ১৪ বস্তা, একই এলাকার সার বিক্রেতা মেসার্স মামা-ভাগিনা ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আল আমিনের প্রতিষ্ঠান থেকে ১ শত ৯২ বস্তা, ভেরভেরিরহাট এলাকার সার ব্যবসায়ী মেসার্স রিফাত অ্যান্ড রিশাদ ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী বুলবুল হোসেনের প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ শত ৪৭ বস্তা সার এবং পাটগ্রাম বাজারের সার বিক্রেতা মেসার্স অগ্রণী ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী ফারুক আহম্মেদের নিকট থেকে ৪ শত ১৬ বস্তা জব্দ করা হয়।
এ সময় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুদ ও বেশি দামে বিক্রি করার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সার ব্যবসায়ী ফারুক আহম্মেদকে ৩০ হাজার, মিলন শেখকে ২০ হাজার, হায়দার আলী রাসেলকে ২০ হাজার, মনিরুজ্জামান মনুকে ২০ হাজার, আব্দুল হামিদকে ২০ হাজার, রাইসুল ইসলামকে ১০ হাজার ও হাফিজুল ইসলামকে ১০ হাজার করে টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জব্দকৃত সারগুলো পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে উপজেলার কৃষকদের মধ্যে বিক্রয় করার আদেশ দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।
পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বাইরে থেকে সার এনে মজুদ করে ও বেশি দামে বিক্রি করায় বাজারে সারের সার্বিক পরিস্থিতি বিনষ্ট হচ্ছে। এসব ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। আমাদের কাছে যতটুকু সরকারি সার বরাদ্দ আসবে ততটুকু ন্যায্য মূল্যে কৃষকের হাতে তুলে দিতে কাজ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উত্তম কুমার দাশ বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুদ করে বেশি দামে বিক্রি করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী ৮ সার বিক্রেতাকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে ৯ হাজার ৮০ বস্তা সার জব্দকৃত করা হয়েছে। এসব সার পাটগ্রাম উপজেলার কৃষকদের মধ্যে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা হবে।
ডিএস./




















