০৫:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

লালমনিরহাটে সুদ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার আসাদুজ্জামান বাবু নামে এক দাদন (সুদ) ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করে স্থানীয় ভূক্তভোগিরা।

অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান বাবু আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সারপুকুর তেলীটারী গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় সাপ্টিবাড়ী বাজারে কসমেটিক্স ব্যবসার আড়ালে দীঘদিন ধরে দাদন (সুদ) ব্যবসা করে আসছেন। তার চড়া সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত, মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এক নারী ইতিমধ্যে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান এলাকাবাসী।

এ সময় দাদন (সুদ) ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবুকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, ভুক্তভোগি গৃহবধূ জাহানারা বেগম ও জাহানুর বেগম সহ আরো অনেকেই।

মানববন্ধনে আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের দক্ষিণ বত্রিশ হাজারী গ্রামের দোলোয়ার হোসেনের স্ত্রী (গৃহবধু) জাহানুর বেগম বলেন, আমি ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে দাদন ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবুর কাছে দুই লক্ষ টাকার বিনিময় প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা সুদ দেই। এ ভাবেই ১৮ মাস সুদের টাকা দেয়ার পর আসাদুজ্জামান বাবুকে আসল ২ লক্ষ টাকা ফেরত দেন। ওই সময় চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত না দিয়ে আসাদুজ্জামান বাবু ৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দাবী করে জাহানুরকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

উক্ত মানববন্ধনে একই গ্রামের মমিন উল্লাহর স্ত্রী (গৃহবধূ) জাহানারা বেগম বলেন, আমিও প্রায় ২ বছর পূর্বে ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে দাদন ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবুর কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতিমাসে ৯ হাজার ৭০০ টাকা হিসেবে দীর্ঘ ৮ মাস সুদের টাকা দেই। এরপর আসাদুজ্জামান বাবুকে আসল ৬৫ হাজার টাকাও পরিশোধ করি। কিন্তু ওই সময় স্ট্যাম্প ও চেক ফেরত না দিয়ে এখন ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার দাবিতে মামলা করেন।
আরও এক ভুক্তভোগী আদিতমারী দক্ষিণ পাড়া মৃত আঃ খালেক এর পুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি আসাদুজ্জামান বাবুর কাছে ১ লক্ষ টাকা নিয়েছি, টাকা পরিষদ করার পরও এখনো দাবি করছেন সেই টাকার। তার কাছে আমার দুটি ফাঁকা চেক ও ষ্ট্যাম্প রয়েছে। চেক থাকার কারণে প্রতিনিয়ত মামলার হুমকি দিচ্ছেন।

এ ঘটনায় নিরুপায় জাহানুর ও জাহানারা বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান বাবু’র বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় পৃথক পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করার পরেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেননি। ফলে আসাদুজ্জামান বাবুকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।

অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, সুদে নয়, টাকা সমিতির মাধ্যমে হাওলাত দিয়েছি। টাকা চাওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে এমনটা করছেন।

আর এ বিষয়ে আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আকবর বলেন, দাদন ব্যবসা বেআইনি। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিএস./

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

নির্বাচন বানচালে ছোটখাটো নয় বড় শক্তি কাজ করবে : প্রধান উপদেষ্টা

লালমনিরহাটে সুদ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত : ০৫:০৩:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার আসাদুজ্জামান বাবু নামে এক দাদন (সুদ) ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করে স্থানীয় ভূক্তভোগিরা।

অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান বাবু আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সারপুকুর তেলীটারী গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় সাপ্টিবাড়ী বাজারে কসমেটিক্স ব্যবসার আড়ালে দীঘদিন ধরে দাদন (সুদ) ব্যবসা করে আসছেন। তার চড়া সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত, মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এক নারী ইতিমধ্যে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান এলাকাবাসী।

এ সময় দাদন (সুদ) ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবুকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, ভুক্তভোগি গৃহবধূ জাহানারা বেগম ও জাহানুর বেগম সহ আরো অনেকেই।

মানববন্ধনে আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের দক্ষিণ বত্রিশ হাজারী গ্রামের দোলোয়ার হোসেনের স্ত্রী (গৃহবধু) জাহানুর বেগম বলেন, আমি ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে দাদন ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবুর কাছে দুই লক্ষ টাকার বিনিময় প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা সুদ দেই। এ ভাবেই ১৮ মাস সুদের টাকা দেয়ার পর আসাদুজ্জামান বাবুকে আসল ২ লক্ষ টাকা ফেরত দেন। ওই সময় চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত না দিয়ে আসাদুজ্জামান বাবু ৮ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দাবী করে জাহানুরকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

উক্ত মানববন্ধনে একই গ্রামের মমিন উল্লাহর স্ত্রী (গৃহবধূ) জাহানারা বেগম বলেন, আমিও প্রায় ২ বছর পূর্বে ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে দাদন ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবুর কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতিমাসে ৯ হাজার ৭০০ টাকা হিসেবে দীর্ঘ ৮ মাস সুদের টাকা দেই। এরপর আসাদুজ্জামান বাবুকে আসল ৬৫ হাজার টাকাও পরিশোধ করি। কিন্তু ওই সময় স্ট্যাম্প ও চেক ফেরত না দিয়ে এখন ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার দাবিতে মামলা করেন।
আরও এক ভুক্তভোগী আদিতমারী দক্ষিণ পাড়া মৃত আঃ খালেক এর পুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমি আসাদুজ্জামান বাবুর কাছে ১ লক্ষ টাকা নিয়েছি, টাকা পরিষদ করার পরও এখনো দাবি করছেন সেই টাকার। তার কাছে আমার দুটি ফাঁকা চেক ও ষ্ট্যাম্প রয়েছে। চেক থাকার কারণে প্রতিনিয়ত মামলার হুমকি দিচ্ছেন।

এ ঘটনায় নিরুপায় জাহানুর ও জাহানারা বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান বাবু’র বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় পৃথক পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করার পরেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেননি। ফলে আসাদুজ্জামান বাবুকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।

অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, সুদে নয়, টাকা সমিতির মাধ্যমে হাওলাত দিয়েছি। টাকা চাওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে এমনটা করছেন।

আর এ বিষয়ে আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আকবর বলেন, দাদন ব্যবসা বেআইনি। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিএস./