০৪:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

পরীক্ষিত নেতার ওপর আস্থা ষষ্ঠবারের মতো আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে সরওয়ার নিজামের হাতে ধানের শীষ

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ষষ্ঠবারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও তিনবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সরওয়ার জামাল নিজাম।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম ঘোষণা করেন। এর পরপরই আনোয়ারা ও কর্ণফুলীতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা অনেক নেতাকর্মীর মধ্যেও ফিরে এসেছে নতুন উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য।

মনোনয়নের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আবহ। যদিও কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় মিছিল বা সমাবেশ নিষিদ্ধ ছিল, তবুও অনেক নেতাকর্মী নিজ উদ্যোগে নিরবে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আলী বলেন “আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আগে থেকেই বিশ্বাস ছিল, নিজাম সাহেবই মনোনয়ন পাবেন।”

শহীদ জিয়া প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক আবু তাহের জানান “তৃণমূলের মতামতই প্রতিফলিত হয়েছে। মানুষ স্বস্তি পেয়েছে, বিএনপির ভেতরে নতুন প্রাণ এসেছে।”

স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রাজনীতিবিদ ও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সরওয়ার জামাল নিজামের রয়েছে বিশেষ সুনাম। তিনি পূর্বে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারকে এবং ২০০১ সালে প্রভাবশালী নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুকে পরাজিত করে নিজাম দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় র‍্যাবের হাতে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। এরপরও তিনি দলকে ছেড়ে যাননি; সংগঠনের প্রতি অবিচল থেকে মাঠে কাজ চালিয়ে গেছেন। তার দৃঢ় অবস্থান ও তৃণমূলের সমর্থনের ফলেই এবারও তিনি দলের আস্থা অর্জন করেছেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপি নেতা আবু তাহের বলেন “নিজাম সাহেব নিজেই কর্মীদের মিষ্টি বিতরণ বা শোভাযাত্রা না করতে অনুরোধ করেছেন। দলীয় শৃঙ্খলাই তার কাছে সর্বাগ্রে।”

উপজেলা যুবদল নেতা মোহাম্মদ লোকমান উদ্দিন অভিমত “মান-সম্মানের মালিক আল্লাহ। আজ দল সেই সম্মান রেখেছে। জনগণও খুশি।”

মনোনয়ন পাওয়ার পর সরওয়ার জামাল নিজাম বলেন “দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে। আমি কৃতজ্ঞ। এখন সবার ঐক্য দরকার। ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে আমরা এই আস্থা ও ভালোবাসার প্রতিদান দেবো।”

তিনি আরও আহ্বান জানান “কর্ণফুলী ও আনোয়ারার মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিজয় উপহার দিতে হবে তারেক রহমানের হাতে।”

আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসন রাজনৈতিকভাবে সবসময়ই আলোচিত। এখানে নিজামের পুনর্নির্বাচন শুধু একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং তৃণমূলে তার গ্রহণযোগ্যতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও দীর্ঘদিনের ত্যাগের স্বীকৃতি।

এমন সময়ে যখন সংগঠন ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে, তখন তার মনোনয়ন বিএনপি ঘরে নতুন গতি ও আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ডিএস./

ট্যাগ :

পরীক্ষিত নেতার ওপর আস্থা ষষ্ঠবারের মতো আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে সরওয়ার নিজামের হাতে ধানের শীষ

প্রকাশিত : ০৪:৪০:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ষষ্ঠবারের মতো দলীয় মনোনয়ন পেলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও তিনবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সরওয়ার জামাল নিজাম।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম ঘোষণা করেন। এর পরপরই আনোয়ারা ও কর্ণফুলীতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা অনেক নেতাকর্মীর মধ্যেও ফিরে এসেছে নতুন উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য।

মনোনয়নের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আবহ। যদিও কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় মিছিল বা সমাবেশ নিষিদ্ধ ছিল, তবুও অনেক নেতাকর্মী নিজ উদ্যোগে নিরবে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আলী বলেন “আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আগে থেকেই বিশ্বাস ছিল, নিজাম সাহেবই মনোনয়ন পাবেন।”

শহীদ জিয়া প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক আবু তাহের জানান “তৃণমূলের মতামতই প্রতিফলিত হয়েছে। মানুষ স্বস্তি পেয়েছে, বিএনপির ভেতরে নতুন প্রাণ এসেছে।”

স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রাজনীতিবিদ ও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সরওয়ার জামাল নিজামের রয়েছে বিশেষ সুনাম। তিনি পূর্বে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারকে এবং ২০০১ সালে প্রভাবশালী নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুকে পরাজিত করে নিজাম দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় র‍্যাবের হাতে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। এরপরও তিনি দলকে ছেড়ে যাননি; সংগঠনের প্রতি অবিচল থেকে মাঠে কাজ চালিয়ে গেছেন। তার দৃঢ় অবস্থান ও তৃণমূলের সমর্থনের ফলেই এবারও তিনি দলের আস্থা অর্জন করেছেন বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপি নেতা আবু তাহের বলেন “নিজাম সাহেব নিজেই কর্মীদের মিষ্টি বিতরণ বা শোভাযাত্রা না করতে অনুরোধ করেছেন। দলীয় শৃঙ্খলাই তার কাছে সর্বাগ্রে।”

উপজেলা যুবদল নেতা মোহাম্মদ লোকমান উদ্দিন অভিমত “মান-সম্মানের মালিক আল্লাহ। আজ দল সেই সম্মান রেখেছে। জনগণও খুশি।”

মনোনয়ন পাওয়ার পর সরওয়ার জামাল নিজাম বলেন “দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে। আমি কৃতজ্ঞ। এখন সবার ঐক্য দরকার। ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করে আমরা এই আস্থা ও ভালোবাসার প্রতিদান দেবো।”

তিনি আরও আহ্বান জানান “কর্ণফুলী ও আনোয়ারার মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিজয় উপহার দিতে হবে তারেক রহমানের হাতে।”

আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসন রাজনৈতিকভাবে সবসময়ই আলোচিত। এখানে নিজামের পুনর্নির্বাচন শুধু একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং তৃণমূলে তার গ্রহণযোগ্যতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও দীর্ঘদিনের ত্যাগের স্বীকৃতি।

এমন সময়ে যখন সংগঠন ধীরে ধীরে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে, তখন তার মনোনয়ন বিএনপি ঘরে নতুন গতি ও আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ডিএস./