০৫:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার চার্জশিট ৭ জানুয়ারির মধ্যে

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এস এন মোঃ নজরুল ইসলাম পিপিএম বলেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার চার্জশিট আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে দাখিল করা হবে।

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এই হত্যা মামলা তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ন্যক্কারজনক এই ঘটনার পরপরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডিবি, সিটিটিসি, র‍্যাব, সিআইডি এবং বিজিবি ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ আরম্ভ করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার দিনই শ্যুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ ওরফে রাহুল এবং তার সহায়তাকারী মোটরসাইকেল চালক মোঃ আলমগীর শেখকে সনাক্ত করা হয়। তাৎক্ষণিক তাদের গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম সাভার, হেমায়েতপুর, আগারগাঁও, নরসিংদীতে অভিযান পরিচালনা করে। ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে ডিএমপির একটি টিম ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় ও অভিযান পরিচালনা করে।

ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মামলাটি নিবিড় তদন্তের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্তকালীন এ যাবত এই ঘটনা সংঘটনে পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ, ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি লুকানোর সাথে জড়িত, ঘটনার মূল দুই হোতাকে পলায়নে সহায়তাকারীসহ মোট এগারো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো:হুমায়ুন কবির (৭০)হাসি বেগম (৬০) সাহেদা পারভীন সামিয়া (২৪) ৪। ওয়াহিদ আহমেদ শিপু (২৭) মারিয়া আক্তার লিমা (২১) মোঃ কবির (৩৩) নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল (৩৪) সিবিয়ন দিও (৩২) সঞ্জয় চিসিম (২৩) মোঃ আমিনুল ইসলাম রাজু (৩৭) ও মোঃ আব্দুল হান্নান (৪২)।

এই ঘটনায় জব্দকৃত উল্লেখযোগ্য আলামতসমূহ হলো:হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন ও ছোরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ভুয়া নম্বর প্লেট ঘটনার সময় ওসমান হাদিকে বহনকারী অটোরিক্সা ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গুলির খোসা, বুলেট, ভিডিওচিত্র, সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য আলামত প্রায় ৫৩টি ব্যাংক একাউন্টের ২১৮ (দুই শত আঠারো) কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেক।

তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন এবং গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া জবানবন্দি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ফয়সাল ও আলমগীর ঘটনার পরপরই ঢাকা হতে সিএনজি যোগে আমিন বাজার যায়। পরবর্তীতে তারা মানিকগঞ্জের কালামপুর যায় এবং সেখান থেকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি প্রাইভেট কারে করে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পৌঁছে।

তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক মূল দুই অভিযুক্ত অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে থাকতে পারে মর্মে জানা গেছে। এই ঘটনার সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত ফয়সালের বাবা-মা, স্ত্রী, শ্যালক, প্রেমিকা ও পলায়নে সহায়তাকারী নুরুজ্জামান ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে । এছাড়া ফয়সাল ও আলমগীরকে পরিবহনকারী তিনজন গাড়ী চালক এবং শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির অটোচালক সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও জানান,চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় রুজুকৃত মামলাটি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছে পাওয়া তথ্য, সাক্ষীদের জবানবন্দি, উদ্ধারকৃত আলামত সমূহ পর্যালোচনা এবং সার্বিক বিবেচনায় মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারীর মধ্যে এ মামলার চার্জশিট প্রদান করা হবে। এই জঘন্য ঘটনায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম ।

ডিএস./

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার মনোনয়নপত্র জমা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার চার্জশিট ৭ জানুয়ারির মধ্যে

প্রকাশিত : ০২:১৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এস এন মোঃ নজরুল ইসলাম পিপিএম বলেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলার চার্জশিট আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে দাখিল করা হবে।

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এই হত্যা মামলা তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ন্যক্কারজনক এই ঘটনার পরপরই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডিবি, সিটিটিসি, র‍্যাব, সিআইডি এবং বিজিবি ঘটনায় জড়িতদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ আরম্ভ করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার দিনই শ্যুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ ওরফে রাহুল এবং তার সহায়তাকারী মোটরসাইকেল চালক মোঃ আলমগীর শেখকে সনাক্ত করা হয়। তাৎক্ষণিক তাদের গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম সাভার, হেমায়েতপুর, আগারগাঁও, নরসিংদীতে অভিযান পরিচালনা করে। ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে ডিএমপির একটি টিম ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় ও অভিযান পরিচালনা করে।

ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মামলাটি নিবিড় তদন্তের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্তকালীন এ যাবত এই ঘটনা সংঘটনে পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ, ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি লুকানোর সাথে জড়িত, ঘটনার মূল দুই হোতাকে পলায়নে সহায়তাকারীসহ মোট এগারো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো:হুমায়ুন কবির (৭০)হাসি বেগম (৬০) সাহেদা পারভীন সামিয়া (২৪) ৪। ওয়াহিদ আহমেদ শিপু (২৭) মারিয়া আক্তার লিমা (২১) মোঃ কবির (৩৩) নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল (৩৪) সিবিয়ন দিও (৩২) সঞ্জয় চিসিম (২৩) মোঃ আমিনুল ইসলাম রাজু (৩৭) ও মোঃ আব্দুল হান্নান (৪২)।

এই ঘটনায় জব্দকৃত উল্লেখযোগ্য আলামতসমূহ হলো:হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, ম্যাগাজিন ও ছোরা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ভুয়া নম্বর প্লেট ঘটনার সময় ওসমান হাদিকে বহনকারী অটোরিক্সা ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গুলির খোসা, বুলেট, ভিডিওচিত্র, সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য আলামত প্রায় ৫৩টি ব্যাংক একাউন্টের ২১৮ (দুই শত আঠারো) কোটি টাকার স্বাক্ষরিত চেক।

তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন এবং গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া জবানবন্দি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ফয়সাল ও আলমগীর ঘটনার পরপরই ঢাকা হতে সিএনজি যোগে আমিন বাজার যায়। পরবর্তীতে তারা মানিকগঞ্জের কালামপুর যায় এবং সেখান থেকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি প্রাইভেট কারে করে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পৌঁছে।

তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক মূল দুই অভিযুক্ত অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে থাকতে পারে মর্মে জানা গেছে। এই ঘটনার সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত ফয়সালের বাবা-মা, স্ত্রী, শ্যালক, প্রেমিকা ও পলায়নে সহায়তাকারী নুরুজ্জামান ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে । এছাড়া ফয়সাল ও আলমগীরকে পরিবহনকারী তিনজন গাড়ী চালক এবং শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির অটোচালক সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও জানান,চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় রুজুকৃত মামলাটি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছে পাওয়া তথ্য, সাক্ষীদের জবানবন্দি, উদ্ধারকৃত আলামত সমূহ পর্যালোচনা এবং সার্বিক বিবেচনায় মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারীর মধ্যে এ মামলার চার্জশিট প্রদান করা হবে। এই জঘন্য ঘটনায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম ।

ডিএস./