স্যারের ভালোবাসা-সান্নিধ্য সব কষ্ট মুছে দিতো কলেজে পড়ার সময় থেকেই আমি স্যারের লেখার ভক্ত। তার বইয়ে অন্যরকম ভালো লাগা খুঁজে পেতাম। তার বই পড়ে এতই মুগ্ধ হয়েছিলাম, তাকে আমি একটি চিঠিও লিখেছিলাম। তার কাজ নিয়ে কথা বলা খুব কঠিন।
আমি তখন অভিনয়ের ভুবনে নিয়মিত কাজ করে চলেছি। স্যার একদিন একজন সহকারীর মাধ্যমে আমাকে নুহাশ চলচ্চিত্রের অফিসে ডাকলেন। অফিসটি তখন কাকরাইলে আসিফ ম্যানশনের সাততলায় ছিল। স্যারের ডাক বলে কথা, দেরি না করে ছুটে গেলাম সেখানে। আমি তখন সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক। কিন্তু ওই অফিসে ঢুকেই বুকটা কাঁপছিল। দেখি, স্যার বসে আছে। মনে হচ্ছিল অডিশন দিতে এসেছি। এরপর তিনি চশমার ফাঁক দিয়ে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলেন। কেন জানি মনে ভয় হচ্ছিল। যাই হোক, অনেকক্ষণ পর তিনি বলে উঠলেন, ‘ঠিক আছে’। এরপর শুরু হলো ‘দুই দুয়ারী’ ছবির কাজ।
যদিও ছবির শুরুর আগে পরিচিত অনেকেই কাজটি করতে আমাকে নিষেধ করেছিলেন। অনেকে চেয়েছিলেন, আমার মতামত বদলে দেওয়ার। কিন্তু আমার সিদ্ধান্ত বদলাইনি, বরং স্যারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ছিলাম।
ছবির কাজটা করতে আমার কষ্ট হয়েছিল। এফডিসির শুটিং শেষ করে গাজীপুরে গিয়ে শুটিং করা, একটু কষ্টকরই বটে। তবে শুটিং সেটে মোটেও ক্লান্ত লাগতো না। স্যারের ভালোবাসা-সান্নিধ্য সব কষ্ট মুছে দিতো। তা ছাড়া স্যারের সঙ্গে শুটিং করা ছিল পিকনিকের মতো। শুটিংয়ে কত যে আয়োজন ছিল, তবে বলে শেষ করা যাবে না। তার একটা ক্ষমতা ছিল, তিনি গল্পকে খুব চমৎকার সুতায় গাঁথতেন। শুটিংয়ের সুবাদে স্যারের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
স্যার আমাদের মাঝে নেই, ভাবলেই কষ্ট লাগে। আমি তাকে অনুভব করি সবসময়। মনে হয় সবখানেই তিনি আছেন। হয়তো তাকে ধরতে পারি না। স্যারের সঙ্গে কাটানো সময়গুলো খুব মিস করি। ওপারে ভালো থাকুক ভালবাসার হুমায়ূন আহমেদ।
বিজনেস বাংলাদেশ-বি/এইচ

























