ত্রাণের লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ সরল নারীদের অঙুলের ছাপ নিচ্ছিলেন যুবকেরা। এভাবেই একে একে ৩০০ নারীর আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে ধরা খেয়েছে ৪ যুবক। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশল্লী ইউনিয়নের মোরাগালা গ্রামে।
গতকাল সোমবার রাতে তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রত্যেককে একমাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহিম সুজন। আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে চার ব্যক্তি করোনায় চাল,ডাল ও তেল ছাড়া প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হবে বলে প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে নারীদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করে। পরে একটি বিশেষ যন্ত্রে আঙ্গুলের ছাপ রেখে প্রথম দফায় আধা কেজি ডাল ও এক কেজি তেল দেওয়া হয়।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় সচেতন মহলে আলোচনা সমালোচনা চললে এলাকার লোকজন ওই চার ব্যক্তির কাছ থেকে আঙুলের ছাপ নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে কোনো ধরনের উত্তর দিতে না পারায় ঘটনাটি নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। পরে চার ব্যক্তি কেটে পড়ার চেষ্টার সময় তাঁদের আটকে রেখে ইউএনওকে অবহিত করা হয়। সেখানে পুলিশসহ ইউএনও গিয়ে তাদের আটক করে সদরে এনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রত্যেককে একমাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছেন সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই এলাকার সন্তোষপুর গ্রামের আক্কাস মিয়ার ছেলে শাহিন(২১) ও সদরের রাজ্জাক মিয়ার ছেলে রুহুল আমীন (২২), সোনাকান্দি গ্রামের আঙ্গুর মিয়ার ছেলে মহসিন ও স্থানীয় মুশল্লী ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সোহাগ মিয়া (৩০)।
আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া ময়না বেগম (৪০) ও আম্বিয়া বেগম (৩৫) জানান, তাঁদের বলা হয়েছে প্রথম দফায় ডাল তেল দেওয়া হবে। পড়ে দেওয়া হবে শাড়ি ও নগদ অর্থ। কোনো কিছু না বুঝেই তাঁরা এ কাজটি করেছেন। এই জন্য তাঁরা এখন চিন্তিত।
অভিযুক্ত মহসিন জানান, তাদের বেতন মাসে সাড়ে আট হাজার করে। এই জন্য তাদের লক্ষমাত্রা যতবেশী নারীর আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া যায়। ছাপ সংগ্রের পর মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে আলাদা পিন কোট দেওয়া হতো। যারা তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন তাঁরা কারা জানতে চাইলে কোনো ধরনের পরিচয় জানেন না বলে জানান।
এ ঘটনায় নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহিম সুজন জানান, এ ঘটনায় ধারাণা করা হচ্ছে একটি চক্র বড় ধরণের কোনো অপরাধ সংঘটিত করার উদ্যেশেই জাতীয় পরিচয়পত্র ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করছে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ মে আর