০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

আলোকিত সমাজ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে ‘তরুছায়া’

ফরিদপুর জেলার ১০ জন উদ্যমী তরুণের চোখে ভাসে অসহায় মানুষের কষ্ট, কানে বাজে খুদার্থ শিশুর আর্তনাদ, কি করবে ওরা ? ২০শে মে ২০১৬ ওরা (১০ জন) বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শান্তিময় আলোকিত সমাজ গঠন করবেই, সেদিন থেকে যাত্রা শুরু হয় তরুছায়া’র। প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে খালিদ মাহমুদ সজিব কাজ শুরুর করে। সবাই তার নির্দেশনায় কাজ শুরু করে। এ আলোর মিছিলে আরো কাজ করছে রায়হান হোসেন, শাখাওয়াত হোসেন, হুজ্জাতুল ইসলাম ত্বহা, নাজমুল হাসান, সাবিবা ইফফাত স্মৃতি, স্বাধীন চৌধুরী। ঝর্না আক্তার, শীলা আক্তার, খাইরুল হাসান রনি, রিয়াজুল ইসলাম, সাব্বির আহমেদ, আঞ্জুমান আরা টুই, রাহুল খন্দকার ও সুরভি আক্তার।

২০১৬ সালে কুমিল্লায় পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় যুব সংসদ বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় যুব সম্মেলন ২০১৬ এ শ্রেষ্ঠ সংগঠন হিসাবে সম্মাননা পায় তরুছায়া।

নিজেদের হাত খরচ থেকে টাকা বাঁচিয়ে জমানো শুরু করে। মাস শেষ হওয়ার আগেই চলে আসে রমজান মাস পুরো দেশ যখন ঈদের আমেজে লিপ্ত ঠিক তখনই তরুছায়া’র সদস্যরা খুঁজেছে কে আছে যে ঈদের নতুন জামা পাইনি, খুঁজতে খুঁজতে সেই সব মানুষের লিষ্ট হয়ে যায় লম্বা, সবাইকে দেওয়ার সামর্থ না হলেও ৫০ জনকে ( মহিলা ও শিশু) ঈদের নতুন জামা প্রদান করা হয় এবং তাদের সাথে নিয়ে করা হয় ইফতার।

হঠাৎ করে চারিদিকে পানি বাড়তে শুরু করে এবং বন্যা হয়। পদ্মার পাড়ের লোকেদের জীবনে নেমে দূর্দশা, সেই চিত্র দেখে তারা চিন্তায় পড়ে যায়। ছোট্ট তরুছায়ায় সদস্য সংখ্যায় কম হলেও ওদের প্রবল ইচ্ছাশক্তি , নিজেদের জমানো টাকা, পরিবার পরিজন সকলের কাছ থেকে আরো কিছু সংগ্রহ করে তরুছায়া ছুটে যায় গোলডাঙির চরে ৫০ পরিবারকে তুলে দিয়েছিল ত্রান সামগ্রী, এবং তাদের ঘর বাড়ি মেরামতের কাজে শ্রম দিয়েছিল সারাদিন।

এদেশে মানুষ বিভিন্ন দিবস পালন করা হয় জাঁকজমক পূর্ন ভাবে। কিন্তু ২ অক্টোবর যে জাতীয় পথশিশু দিবস এটা কি কোনদিন যথার্থভাবে পালন করে? ২০১৬ সাল থেকে এই দিবস পালন করছে তরুছায়া। শহরের স্টেশনে থাকা পথশিশুর সাথে তরুছায়া দিবসটি পালন করে।

শীতার্থ মানুষের শীত কমাতে কৈজুরী ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় কম্বল বিতরন করা হয় গরীব পরিবারের মাঝে।

এদেশ তো আমাদের এটাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখারা দায়িত্ব ও আমাদের, এই চিন্তাকে বুকে ধারন করে ০৪/০২/১৭ শহরের গোয়ালচামট থেকে শুরু করে প্রেসক্লাব পর্যন্ত রাস্তা পরিস্কার ও গনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন করে তরুছায়া।

১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালী জাতির আনন্দের দিন, এই দিনটি তরুছায়া পালন করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে, ইলিশ খিচুরী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ফরিদপুর রেল স্টেশনে।

দেখতে দেখতে সেদিনের তরুছায়া’র ২ বছর হয়ে গেলো। এখন আর ১০ জন নেই এখন তরুছায়া’র লক্ষে পৌছার সংগ্রামে যোগ দিয়েছে শতাধিক তরুন- তরুনী।

২২শে মে ২০১৭ শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে আয়োজন করা হয় “তরুছায়া বর্ষপূর্তি উৎসব” অনুষ্ঠানে এজেন্ডা হিসেবে ছিলো সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে হয় চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা, সমাজসেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনটা সংগঠনকে দেওয়া হয় সম্মানা স্মারক, বৃক্ষপ্রেমি সামাদ শেখ কে দেওয়া হয় চিকিৎসার খরচ, উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) জনাব এরাদুল হক, জনাব আকবর হোসেন, কুমিল্লা থেকে এসেছিলেন জনাব ইমাম হুসাইন আহবায়ক জাতীয় যুব সংসদ, বদরুল হায়দার সহ আরো অনেক গুণীজন ব্যক্তি বর্গ।

তরুছায়া’র এই পথচলা শুধুমাত্র ফরিদপুরকে না মুগ্ধ করেছে সারা বাংলাদেশকে, তার প্রমান স্বরুপ তরুছায়া’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খালিদ মাহমুদ সজীবকে “জাতীয় যুব সংসদ বাংলাদেশ” আহ্বায়ক মোঃ ইমাম হোসাইন  গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত “শ্রেষ্ঠ সংগঠক” এর সার্টিফিকেট প্রদান করে।

রমজান মাস ২০১৭ সকলেই রোজা থাকবে সেহরী খেয়ে এবং রোজা ভাঙগে ইফতার করে এই স্লোগান নিয়ে মাঠে নামে তরুছায়া কয়েকটি গরীব পরিবারকে দেওয়া হয় সারা মাসের বাজার ইফতার সামগ্রী।

 

২ই অক্টোবর জাতীয় পথশিশু দিবস, প্রথম বছর শুধু খাবার বিতরন করলেও ২০১৭ সালের এ দিবসটি বেশ জাঁকজমকপূর্ন ভাবে পালন করা হয়। ৫০ জন পথশিশুকে সকালে চুল কাটানো হয়, ভাল ভাবে গোসল করানো হয়, দুপুরে ভাল খাবার খাওয়ানো হয়, নতুন টি শার্ট প্রদান করা হয়, এরপর সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় শিশু পার্কে এবং প্রতিটা রাইডে চড়ানো হয়, সবশেষে সকলকে কিছু উপহার দেওয়া হয়, শিশুদের এই আনন্দঘন মুহুর্ত উপভোগ করতে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর এর জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া, এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা আইসিটি) শামসুল আলম।

২০১৮ সালে শীতকে কেন্দ্র করে ৩ দিন ব্যাপি শীত বস্ত্র বিতরন কর্মসূচি নেওয়া হয়,
১ম দিন: তাম্বুলখানা আশ্রয় কেন্দ্রে ১০০ পরিবারের মাঝে বিতরন করা হয় শীতবস্ত্র।
২য় দিন: রাস্তায় রাত কাটানো প্রতিটা মানুষকে দেওয়া হয় কম্বল।
৩য় দিন: সমাজের হতদরিদ্র কিছু পরিবারকে খুজে খুজে কম্বল বিতরন করা হয়।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি নাগরিকের উপর ছিনতাইকারীর বর্বর হামলা ,দুই ছিনতাইকারী আটক

আলোকিত সমাজ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে ‘তরুছায়া’

প্রকাশিত : ০১:১০:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

ফরিদপুর জেলার ১০ জন উদ্যমী তরুণের চোখে ভাসে অসহায় মানুষের কষ্ট, কানে বাজে খুদার্থ শিশুর আর্তনাদ, কি করবে ওরা ? ২০শে মে ২০১৬ ওরা (১০ জন) বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শান্তিময় আলোকিত সমাজ গঠন করবেই, সেদিন থেকে যাত্রা শুরু হয় তরুছায়া’র। প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে খালিদ মাহমুদ সজিব কাজ শুরুর করে। সবাই তার নির্দেশনায় কাজ শুরু করে। এ আলোর মিছিলে আরো কাজ করছে রায়হান হোসেন, শাখাওয়াত হোসেন, হুজ্জাতুল ইসলাম ত্বহা, নাজমুল হাসান, সাবিবা ইফফাত স্মৃতি, স্বাধীন চৌধুরী। ঝর্না আক্তার, শীলা আক্তার, খাইরুল হাসান রনি, রিয়াজুল ইসলাম, সাব্বির আহমেদ, আঞ্জুমান আরা টুই, রাহুল খন্দকার ও সুরভি আক্তার।

২০১৬ সালে কুমিল্লায় পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় যুব সংসদ বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় যুব সম্মেলন ২০১৬ এ শ্রেষ্ঠ সংগঠন হিসাবে সম্মাননা পায় তরুছায়া।

নিজেদের হাত খরচ থেকে টাকা বাঁচিয়ে জমানো শুরু করে। মাস শেষ হওয়ার আগেই চলে আসে রমজান মাস পুরো দেশ যখন ঈদের আমেজে লিপ্ত ঠিক তখনই তরুছায়া’র সদস্যরা খুঁজেছে কে আছে যে ঈদের নতুন জামা পাইনি, খুঁজতে খুঁজতে সেই সব মানুষের লিষ্ট হয়ে যায় লম্বা, সবাইকে দেওয়ার সামর্থ না হলেও ৫০ জনকে ( মহিলা ও শিশু) ঈদের নতুন জামা প্রদান করা হয় এবং তাদের সাথে নিয়ে করা হয় ইফতার।

হঠাৎ করে চারিদিকে পানি বাড়তে শুরু করে এবং বন্যা হয়। পদ্মার পাড়ের লোকেদের জীবনে নেমে দূর্দশা, সেই চিত্র দেখে তারা চিন্তায় পড়ে যায়। ছোট্ট তরুছায়ায় সদস্য সংখ্যায় কম হলেও ওদের প্রবল ইচ্ছাশক্তি , নিজেদের জমানো টাকা, পরিবার পরিজন সকলের কাছ থেকে আরো কিছু সংগ্রহ করে তরুছায়া ছুটে যায় গোলডাঙির চরে ৫০ পরিবারকে তুলে দিয়েছিল ত্রান সামগ্রী, এবং তাদের ঘর বাড়ি মেরামতের কাজে শ্রম দিয়েছিল সারাদিন।

এদেশে মানুষ বিভিন্ন দিবস পালন করা হয় জাঁকজমক পূর্ন ভাবে। কিন্তু ২ অক্টোবর যে জাতীয় পথশিশু দিবস এটা কি কোনদিন যথার্থভাবে পালন করে? ২০১৬ সাল থেকে এই দিবস পালন করছে তরুছায়া। শহরের স্টেশনে থাকা পথশিশুর সাথে তরুছায়া দিবসটি পালন করে।

শীতার্থ মানুষের শীত কমাতে কৈজুরী ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় কম্বল বিতরন করা হয় গরীব পরিবারের মাঝে।

এদেশ তো আমাদের এটাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখারা দায়িত্ব ও আমাদের, এই চিন্তাকে বুকে ধারন করে ০৪/০২/১৭ শহরের গোয়ালচামট থেকে শুরু করে প্রেসক্লাব পর্যন্ত রাস্তা পরিস্কার ও গনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন করে তরুছায়া।

১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালী জাতির আনন্দের দিন, এই দিনটি তরুছায়া পালন করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে, ইলিশ খিচুরী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ফরিদপুর রেল স্টেশনে।

দেখতে দেখতে সেদিনের তরুছায়া’র ২ বছর হয়ে গেলো। এখন আর ১০ জন নেই এখন তরুছায়া’র লক্ষে পৌছার সংগ্রামে যোগ দিয়েছে শতাধিক তরুন- তরুনী।

২২শে মে ২০১৭ শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে আয়োজন করা হয় “তরুছায়া বর্ষপূর্তি উৎসব” অনুষ্ঠানে এজেন্ডা হিসেবে ছিলো সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে হয় চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা, সমাজসেবায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনটা সংগঠনকে দেওয়া হয় সম্মানা স্মারক, বৃক্ষপ্রেমি সামাদ শেখ কে দেওয়া হয় চিকিৎসার খরচ, উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) জনাব এরাদুল হক, জনাব আকবর হোসেন, কুমিল্লা থেকে এসেছিলেন জনাব ইমাম হুসাইন আহবায়ক জাতীয় যুব সংসদ, বদরুল হায়দার সহ আরো অনেক গুণীজন ব্যক্তি বর্গ।

তরুছায়া’র এই পথচলা শুধুমাত্র ফরিদপুরকে না মুগ্ধ করেছে সারা বাংলাদেশকে, তার প্রমান স্বরুপ তরুছায়া’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খালিদ মাহমুদ সজীবকে “জাতীয় যুব সংসদ বাংলাদেশ” আহ্বায়ক মোঃ ইমাম হোসাইন  গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রীর স্বাক্ষরিত “শ্রেষ্ঠ সংগঠক” এর সার্টিফিকেট প্রদান করে।

রমজান মাস ২০১৭ সকলেই রোজা থাকবে সেহরী খেয়ে এবং রোজা ভাঙগে ইফতার করে এই স্লোগান নিয়ে মাঠে নামে তরুছায়া কয়েকটি গরীব পরিবারকে দেওয়া হয় সারা মাসের বাজার ইফতার সামগ্রী।

 

২ই অক্টোবর জাতীয় পথশিশু দিবস, প্রথম বছর শুধু খাবার বিতরন করলেও ২০১৭ সালের এ দিবসটি বেশ জাঁকজমকপূর্ন ভাবে পালন করা হয়। ৫০ জন পথশিশুকে সকালে চুল কাটানো হয়, ভাল ভাবে গোসল করানো হয়, দুপুরে ভাল খাবার খাওয়ানো হয়, নতুন টি শার্ট প্রদান করা হয়, এরপর সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় শিশু পার্কে এবং প্রতিটা রাইডে চড়ানো হয়, সবশেষে সকলকে কিছু উপহার দেওয়া হয়, শিশুদের এই আনন্দঘন মুহুর্ত উপভোগ করতে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর এর জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া, এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( শিক্ষা আইসিটি) শামসুল আলম।

২০১৮ সালে শীতকে কেন্দ্র করে ৩ দিন ব্যাপি শীত বস্ত্র বিতরন কর্মসূচি নেওয়া হয়,
১ম দিন: তাম্বুলখানা আশ্রয় কেন্দ্রে ১০০ পরিবারের মাঝে বিতরন করা হয় শীতবস্ত্র।
২য় দিন: রাস্তায় রাত কাটানো প্রতিটা মানুষকে দেওয়া হয় কম্বল।
৩য় দিন: সমাজের হতদরিদ্র কিছু পরিবারকে খুজে খুজে কম্বল বিতরন করা হয়।