নদীর নাম সুতিয়া। একপাশে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বাউশালীপাড়া গ্রাম, অপরপাশে নেত্রকোনার দক্ষিণ বিশুউড়া গ্রাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজারের কারণে দুই পাড়ের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষকে প্রতিনিয়ত নদী পার হতে হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার ঘুরেও সেতু হয়নি। এখন নিজেরাই ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় কয়েকজন তরুণ এ উদ্যোগ নেন। প্রতিটি বাড়ি ও আশপাশের বাজার থেকে চাঁদা তোলা হয়। খুঁটি আর লোহার রেলিং লাগানোর পর সেতু দৃশ্যমান হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। ইস্পাতের পাটাতন লাগাতে আর তিন লাখ টাকার মতো লাগবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন সেতুটির কাছে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ভিড়। কেউ সেতুর কাঠামোর ওপরে বসে খুঁটির সঙ্গে রেলিং বেঁধে দিচ্ছেন। কেউ নিচে পানির মধ্যে নেমে খুঁটিগুলো সোজা করার কাজে ব্যস্ত। অন্যরা পাড়ে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জোগান দিচ্ছেন।
সেতুর কাজে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর আগে গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে তাঁরা লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু ওই স্থানে সেতু করতে হবে ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের। নিয়মানুযায়ী এলজিইডি ১৫০ ফুটের বেশি দৈর্ঘ্যের সেতু করতে পারে না। এমন সেতু তৈরি করতে পারে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। কিন্তু বাউশালীপাড়া গ্রাম এলাকায় সওজের কোনো সড়ক নেই। তাই সওজও সেখানে সেতু নির্মাণ করতে পারবে না।
সব মিলিয়ে সরকারি অর্থায়নে ওই স্থানে সেতু নির্মাণের সম্ভাবনা দেখছেন না এলাকাবাসী। তাই বলে সেতু হবে না, এ বিষয়টি মানতে নারাজ বাউশালীপাড়া গ্রামের একদল তরুণ। তাঁরা গত জানুয়ারি থেকে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ওই তরুণদের নেতৃত্ব দেন আজহারুল, সোহেল রানা ও মুঞ্জরুল হক। তাঁরাই প্রথম সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। পরে এতে গ্রামের অন্যরা যুক্ত হন।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, ‘বিষয়টি অবশ্যই একটি মহৎ কাজ। এ কাজে আমাদের সহযোগিতাও থাকবে।’





















