০২:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে প্রয়োজন সচেতনতা

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। কালের বিবর্তনে বদলে গেছে প্রাচীন সব পদ্ধতি, নতুন নতুন প্রযুক্তির সুবাদে পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয়। সময়ের পরিক্রমায় বদলেছে অনেক কিছু। ইন্টারনেটের কল্যানে আমরা চাইলে এখন অনেক কিছুই করতে পারি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনসহ

মূহুর্তেই বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্য আদানপ্রদানের পাশাপাশি অনেক কিছুই করা সম্ভব। এছাড়াও ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লোকেশন নির্ণয়ে। নিজের অবস্থান কিংবা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লোকেশন সহজেই আমরা জেনে নিতে পারি ইন্টারনেটের সুবাদে।

কিন্তু বর্তমান সময়ে কিছু অসাধু ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিত্য নতুন সমস্যার উদ্ভাবন করছে। আর এই ইন্টারনেটে অপব্যবহারের ফলে অনেকেই বিপদে পড়ছেন নানাভাবে। বিশেষ করে শিশুরা। শিশুদের অবাধে ইন্টারনেট ব্যবহারে জড়িয়ে পড়ছে কোনো অপরাধ কিংবা অবৈধ কার্যকলাপে।

ডিজিটাল যামানায় আমরা অনেকটা সময় কিন্তু সামাজিক সাইটগুলোর সাথেই ব্যয় করে থাকি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘নিউজ ফিডে’ যা-ই দেখা যায় তা-ই সংবাদ নয়। কিন্তু অর্থ উপার্জনের নেশায় পড়ে অনেকে এখন যেনতেনভাবে নানা তথ্য প্রচার করছেন ইন্টারনেটে। এর মধ্য দিয়ে প্রচারিত কোন তথ্য সঠিক আর কোন তথ্য ভুয়া সেটি শনাক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সচেতনতা তৈরি করা গেলে ভুল তথ্য ছাড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নওগাঁ জেলা তথ্য অফিসের উপপরিচালক আবু সালেহ মো. মাসুদুল ইসলাম বলেন, একদম মিথ্যা কিংবা অর্ধসত্য তথ্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়ানো হয়। এটিই ভুয়া সংবাদ। মিসইনফরমেশন, ডিজইনফরমেশন ও ম্যালইনফরমেশন- তিন ধরনের তথ্য সমাজের জন্য ক্ষতিকর। নতুন আরেকটি শব্দ এসেছে মিডইনফরমেশন, অর্থাৎ কোনো তথ্য পুরোপুরি সঠিক কিংবা ভুল বলে সিদ্ধান্তে যেতে পারছে না, এমন তথ্য।

এছাড়া মিসইনফরমেশন মানে ভুল তথ্য। অজ্ঞতা বা অসতর্কতার কারণে এমন ভুল তথ্য ছড়ানো। ডিজইনফরমেশন হলো কোনো ব্যক্তি, সামাজিক গ্রুপ, সংগঠন বা দেশকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য ভুল তথ্যের ইছাকৃত ব্যবহার করা। ম্যালইনফরমেশন হলো তথ্যটি সঠিক। কিন্তু সঠিক তথ্যকে কোনো ব্যক্তি, সামাজিক গ্রুপ, সংগঠন বা দেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার।

আবু সালেহ মো. মাসুদুল ইসলাম আরও বলেন, কোনো তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ হলে সেই ওয়েবসাইট যদি কোনো প্রতিষ্ঠিত বা মূল ধারার সংবাদ মাধ্যম হয় তাহলে সেটি সাধারণত ভুল তথ্য দেবে না। এছাড়াও যেকোনো ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেসবারে ওয়েব ঠিকানার শুরুতে https:// থাকলে সেটি নিরাপদ মনে করা যায়, আর শুধু http:// থাকলে সেই ওয়েবসাইট নিরাপদ না।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মনিটাইজেশন সিস্টেম অর্থাৎ স্যোশাল মিডিয়ায় তথ্য প্রচারের মাধ্যমে উপার্জন করার সুবিধার জন্য অনেকে বিভিন্ন নামে ওয়েবপোর্টাল পরিচালনা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে এমন একটা ইনফরমেশন ইকোসিস্টেম গড়ে উঠুক, যেন ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ করা যায়। একইসঙ্গে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসিও বাড়াতে হবে। কিছু স্যোশাল মিডিয়া ভুয়া তথ্য প্রচার ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, কিন্তু সব স্যোশাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এমন উদ্যোগ নিচ্ছে না।

তাই, ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে সচেতনতা খুব জরুরি। এছাড়া নিউজপোর্টালগুলোতে প্রত্যেকটি নিউজে পাঠকের রেটিং সিস্টেম চালু করা যেতে পারে। তাহলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাড়ানো তথ্য ঠেকাতে সচেতন পাঠকরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :

ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে প্রয়োজন সচেতনতা

প্রকাশিত : ০৭:৪৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। কালের বিবর্তনে বদলে গেছে প্রাচীন সব পদ্ধতি, নতুন নতুন প্রযুক্তির সুবাদে পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয়। সময়ের পরিক্রমায় বদলেছে অনেক কিছু। ইন্টারনেটের কল্যানে আমরা চাইলে এখন অনেক কিছুই করতে পারি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনসহ

মূহুর্তেই বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্য আদানপ্রদানের পাশাপাশি অনেক কিছুই করা সম্ভব। এছাড়াও ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লোকেশন নির্ণয়ে। নিজের অবস্থান কিংবা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লোকেশন সহজেই আমরা জেনে নিতে পারি ইন্টারনেটের সুবাদে।

কিন্তু বর্তমান সময়ে কিছু অসাধু ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিত্য নতুন সমস্যার উদ্ভাবন করছে। আর এই ইন্টারনেটে অপব্যবহারের ফলে অনেকেই বিপদে পড়ছেন নানাভাবে। বিশেষ করে শিশুরা। শিশুদের অবাধে ইন্টারনেট ব্যবহারে জড়িয়ে পড়ছে কোনো অপরাধ কিংবা অবৈধ কার্যকলাপে।

ডিজিটাল যামানায় আমরা অনেকটা সময় কিন্তু সামাজিক সাইটগুলোর সাথেই ব্যয় করে থাকি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘নিউজ ফিডে’ যা-ই দেখা যায় তা-ই সংবাদ নয়। কিন্তু অর্থ উপার্জনের নেশায় পড়ে অনেকে এখন যেনতেনভাবে নানা তথ্য প্রচার করছেন ইন্টারনেটে। এর মধ্য দিয়ে প্রচারিত কোন তথ্য সঠিক আর কোন তথ্য ভুয়া সেটি শনাক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সচেতনতা তৈরি করা গেলে ভুল তথ্য ছাড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নওগাঁ জেলা তথ্য অফিসের উপপরিচালক আবু সালেহ মো. মাসুদুল ইসলাম বলেন, একদম মিথ্যা কিংবা অর্ধসত্য তথ্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়ানো হয়। এটিই ভুয়া সংবাদ। মিসইনফরমেশন, ডিজইনফরমেশন ও ম্যালইনফরমেশন- তিন ধরনের তথ্য সমাজের জন্য ক্ষতিকর। নতুন আরেকটি শব্দ এসেছে মিডইনফরমেশন, অর্থাৎ কোনো তথ্য পুরোপুরি সঠিক কিংবা ভুল বলে সিদ্ধান্তে যেতে পারছে না, এমন তথ্য।

এছাড়া মিসইনফরমেশন মানে ভুল তথ্য। অজ্ঞতা বা অসতর্কতার কারণে এমন ভুল তথ্য ছড়ানো। ডিজইনফরমেশন হলো কোনো ব্যক্তি, সামাজিক গ্রুপ, সংগঠন বা দেশকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য ভুল তথ্যের ইছাকৃত ব্যবহার করা। ম্যালইনফরমেশন হলো তথ্যটি সঠিক। কিন্তু সঠিক তথ্যকে কোনো ব্যক্তি, সামাজিক গ্রুপ, সংগঠন বা দেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার।

আবু সালেহ মো. মাসুদুল ইসলাম আরও বলেন, কোনো তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ হলে সেই ওয়েবসাইট যদি কোনো প্রতিষ্ঠিত বা মূল ধারার সংবাদ মাধ্যম হয় তাহলে সেটি সাধারণত ভুল তথ্য দেবে না। এছাড়াও যেকোনো ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেসবারে ওয়েব ঠিকানার শুরুতে https:// থাকলে সেটি নিরাপদ মনে করা যায়, আর শুধু http:// থাকলে সেই ওয়েবসাইট নিরাপদ না।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মনিটাইজেশন সিস্টেম অর্থাৎ স্যোশাল মিডিয়ায় তথ্য প্রচারের মাধ্যমে উপার্জন করার সুবিধার জন্য অনেকে বিভিন্ন নামে ওয়েবপোর্টাল পরিচালনা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে এমন একটা ইনফরমেশন ইকোসিস্টেম গড়ে উঠুক, যেন ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ করা যায়। একইসঙ্গে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসিও বাড়াতে হবে। কিছু স্যোশাল মিডিয়া ভুয়া তথ্য প্রচার ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, কিন্তু সব স্যোশাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এমন উদ্যোগ নিচ্ছে না।

তাই, ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে সচেতনতা খুব জরুরি। এছাড়া নিউজপোর্টালগুলোতে প্রত্যেকটি নিউজে পাঠকের রেটিং সিস্টেম চালু করা যেতে পারে। তাহলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাড়ানো তথ্য ঠেকাতে সচেতন পাঠকরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর