০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাঁচা-মরার ম্যাচ আজ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার 

ভয় নেই আবার আছেও। কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে, একই সঙ্গে অস্বস্তিও কুরে কুরে খাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ এশিয়া কাপের বাঁচা-মরার ম্যাচের আগে এমনই দোটানায় বাংলাদেশ। অভয় পাচ্ছে রশিদ খান ও মুজিব-উর রহমানকে আবার খেলতে হচ্ছে না বলে।

চোটের কারণে এই এশিয়া কাপে প্রতিপক্ষের দুই ফ্রন্টলাইন পেসার দুশমন্ত চামিরা ও লাহিরু কুমারা নেই বলে স্বস্তিতেও থাকা যাচ্ছে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ হাঁপ ছেড়ে বাঁচার মতো করেই যেন বললেন, ‘শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা ভালো। তবে ওরা তো আর রশিদ বা মুজিব নয়। হতে পারে ম্যাচের আগে মাহমুদের ‘মাইন্ড গেম’ খেলার চেষ্টা এটি। না হলে লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাশারাঙ্গা এবং রহস্য স্পিনার মুজিবের লঙ্কান সংস্করণ মহেশ থিকশানাদের আফগান স্পিনারদের চেয়ে পিছিয়ে রাখার উপায় তো এঁদের আইপিএল পারফরম্যান্স রাখছে না। সর্বশেষ আইপিএলের সেরা বোলিং গড় (১৬.৫৩) হাশারাঙ্গার। রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ১৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২৬ উইকেট। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলে ১২ উইকেট নেওয়া থিকশানাও বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিজের কার্যকারিতার জানান দিয়েছেন।

এসব কিছুতেই অজানা থাকার কোনো কারণ নেই বাংলাদেশ শিবিরের। তার ওপর আফগানদের বিপক্ষে নিজেদের সেরা অস্ত্র বলে বিবেচিত হয়ে আসা মুস্তাফিজুর রহমানও শেষে গিয়ে ম্যাচ হারার কারণ হয়েছেন। গত দুই বছরে দেশের বাইরে তাঁর টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। এর সঙ্গে মানানসই বোলিংয়েই বেহাল মুস্তাফিজকে ‘অটো চয়েজ’ ধরে নেওয়ার দিনও ফুরিয়ে আসছে বলে মনে হচ্ছে মাহমুদের। কিন্তু এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচের পর বাংলাদেশকে তো আর এই একটি দিক নিয়ে ভাবলেই হচ্ছে না। সর্বাঙ্গে ব্যথা এমনই যে ভাবনায় ঢুকে পড়ছে অদলবদলের অনেক ক্ষেত্রও।

কিন্তু আফগানদের কাছে হারের ধাক্কা এমনই প্রবল যে বুধবার বিকেলেও চিন্তা অনেকটাই সংকুচিত হয়ে আছে বলে জানালেন মাহমুদ নিজেই। একাদশে বোলিং আক্রমণে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেই ফেললেন, ‘হতে পারে, বোলিং আক্রমণে পরিবর্তন আসতে পারে। আমরা এখনো চিন্তা করছি। কালকেই তো ধাক্কাটা খেলাম। এ জন্যই সময় লাগছে। ’

চিন্তাও খুলে যাওয়ার কথা গত রাতের মধ্যেই। কারণ সময় বেশি নেই। ‘বি’ গ্রুপ থেকে সুপার ফোর পর্বে যেতে আজ লঙ্কানদের হারানোর বিকল্প নেই কোনো। আরেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সেরা খেলা বের করে আনার ক্ষেত্রে কঠিন পরিস্থিতিও বড্ড দরকারি বলে মনে হচ্ছে টিম ডিরেক্টরের, ‘কাল (আজ) আমাদের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বাঁচা-মরার ম্যাচ যাকে বলে! আমরা ওপরে (সুপার ফোর) যাব কি যাব না, সেটির লড়াই। অনেক চ্যালেঞ্জিং। ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য এই চ্যালেঞ্জ থাকার দরকারও আছে। ’

এই চ্যালেঞ্জে জিততে বাংলাদেশ শিবির অনেক কিছু বদলানোর দরকার আছে বলেও মনে করছে। যতটুকু খবর, একেবারে নতুন ওপেনিং জুটিও দেখা যেতে পারে। এই অদলবদলের চিন্তাকেও ঘিরে আছে ভয়। বাদ পড়ে দলের ত্রিসীমানায়ও আর না থাকা নাঈম শেখকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম যাঁকে সহজাত স্ট্রোকমেকার বলে প্রশংসাও করেছিলেন। তবে আফগানিস্তান ম্যাচের পর সেই অবস্থান বদলে যাওয়ার সুর দল সংশ্লিষ্ট একজনের কথায়, ‘নাঈম স্পিনের বিপক্ষে কাঁপতে শুরু করে। ওকে দেখলেই ওরা (শ্রীলঙ্কা) থিকশানাকে দিয়ে বোলিং শুরু করাবে। ’

লঙ্কান স্পিনারদের রশিদ-মুজিবদের সমকক্ষ মনে না করলেও বাংলাদেশ শিবিরের ভয় তাই আছেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সাতটি টি-টোয়েন্টি খেলে ফেললেও দলের আস্থা অর্জন করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়ও। শ্রীলঙ্কা ম্যাচ ভাবনা থেকে তাঁরও ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা, ‘বিজয় তো ব্যাটেই বল লাগাতে পারছে না। ’ পরিবর্তনের হাওয়ায় এই দুজন যদি উড়ে যান, তাহলে উড়ে আসবেন কারা। গতকাল আইসিসি একাডেমির সেন্টার উইকেটে দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনে ব্যাটিংয়ে দুজনকে গুরুত্ব পেতে দেখে সে আভাস কিছুটা মিলেছেও। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে ওপেন করতে দেখার সম্ভাবনার কথা শোনা গেছে দলীয় সূত্র থেকেও, ‘নিশ্চিত নয় এখনো। তবে মিরাজ-সাব্বিরকে ওপেনিংয়ে দেখা যেতেই পারে।

মিরাজ ২০১৮ সালে ওয়ানডে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ছিলেন লিটন কুমার দাসের ওপেনিং সঙ্গী। সেঞ্চুরি পার্টনারশিপেও অবদান রেখেছিলেন ৩৮ রান করে। এ ছাড়া বিপিএল টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিতই ওপেন করতে দেখা গেছে তাঁকে। তবে সাব্বিরও ফিরেছেন নাঈমের মতো অবস্থায় থেকেই। কোথাও কোনো পারফরম্যান্স ছিল না। তবু অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে পুনর্জন্ম দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন ওপেনারের ভূমিকায়। পরীক্ষিত নন, তবু একাদশে ঢুকে পড়ার বিবেচনায় এগিয়ে।

নাঈমকে নামানোর জুয়াটা কাজে লাগেনি। ব্যথা যেহেতু সর্বাঙ্গেই, তাই সাব্বিরকে নিয়েও সেটি বোধ হয় খেলতেই হচ্ছে!

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব

জনপ্রিয়

আমি কুমিল্লার মানুষের হৃদয়ে নাম লিখতে চাই : নবাগত জেলা প্রশাসক

বাঁচা-মরার ম্যাচ আজ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার 

প্রকাশিত : ০১:৪৮:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২

ভয় নেই আবার আছেও। কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে, একই সঙ্গে অস্বস্তিও কুরে কুরে খাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ এশিয়া কাপের বাঁচা-মরার ম্যাচের আগে এমনই দোটানায় বাংলাদেশ। অভয় পাচ্ছে রশিদ খান ও মুজিব-উর রহমানকে আবার খেলতে হচ্ছে না বলে।

চোটের কারণে এই এশিয়া কাপে প্রতিপক্ষের দুই ফ্রন্টলাইন পেসার দুশমন্ত চামিরা ও লাহিরু কুমারা নেই বলে স্বস্তিতেও থাকা যাচ্ছে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ হাঁপ ছেড়ে বাঁচার মতো করেই যেন বললেন, ‘শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা ভালো। তবে ওরা তো আর রশিদ বা মুজিব নয়। হতে পারে ম্যাচের আগে মাহমুদের ‘মাইন্ড গেম’ খেলার চেষ্টা এটি। না হলে লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাশারাঙ্গা এবং রহস্য স্পিনার মুজিবের লঙ্কান সংস্করণ মহেশ থিকশানাদের আফগান স্পিনারদের চেয়ে পিছিয়ে রাখার উপায় তো এঁদের আইপিএল পারফরম্যান্স রাখছে না। সর্বশেষ আইপিএলের সেরা বোলিং গড় (১৬.৫৩) হাশারাঙ্গার। রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ১৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২৬ উইকেট। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলে ১২ উইকেট নেওয়া থিকশানাও বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নিজের কার্যকারিতার জানান দিয়েছেন।

এসব কিছুতেই অজানা থাকার কোনো কারণ নেই বাংলাদেশ শিবিরের। তার ওপর আফগানদের বিপক্ষে নিজেদের সেরা অস্ত্র বলে বিবেচিত হয়ে আসা মুস্তাফিজুর রহমানও শেষে গিয়ে ম্যাচ হারার কারণ হয়েছেন। গত দুই বছরে দেশের বাইরে তাঁর টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। এর সঙ্গে মানানসই বোলিংয়েই বেহাল মুস্তাফিজকে ‘অটো চয়েজ’ ধরে নেওয়ার দিনও ফুরিয়ে আসছে বলে মনে হচ্ছে মাহমুদের। কিন্তু এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচের পর বাংলাদেশকে তো আর এই একটি দিক নিয়ে ভাবলেই হচ্ছে না। সর্বাঙ্গে ব্যথা এমনই যে ভাবনায় ঢুকে পড়ছে অদলবদলের অনেক ক্ষেত্রও।

কিন্তু আফগানদের কাছে হারের ধাক্কা এমনই প্রবল যে বুধবার বিকেলেও চিন্তা অনেকটাই সংকুচিত হয়ে আছে বলে জানালেন মাহমুদ নিজেই। একাদশে বোলিং আক্রমণে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেই ফেললেন, ‘হতে পারে, বোলিং আক্রমণে পরিবর্তন আসতে পারে। আমরা এখনো চিন্তা করছি। কালকেই তো ধাক্কাটা খেলাম। এ জন্যই সময় লাগছে। ’

চিন্তাও খুলে যাওয়ার কথা গত রাতের মধ্যেই। কারণ সময় বেশি নেই। ‘বি’ গ্রুপ থেকে সুপার ফোর পর্বে যেতে আজ লঙ্কানদের হারানোর বিকল্প নেই কোনো। আরেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সেরা খেলা বের করে আনার ক্ষেত্রে কঠিন পরিস্থিতিও বড্ড দরকারি বলে মনে হচ্ছে টিম ডিরেক্টরের, ‘কাল (আজ) আমাদের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বাঁচা-মরার ম্যাচ যাকে বলে! আমরা ওপরে (সুপার ফোর) যাব কি যাব না, সেটির লড়াই। অনেক চ্যালেঞ্জিং। ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য এই চ্যালেঞ্জ থাকার দরকারও আছে। ’

এই চ্যালেঞ্জে জিততে বাংলাদেশ শিবির অনেক কিছু বদলানোর দরকার আছে বলেও মনে করছে। যতটুকু খবর, একেবারে নতুন ওপেনিং জুটিও দেখা যেতে পারে। এই অদলবদলের চিন্তাকেও ঘিরে আছে ভয়। বাদ পড়ে দলের ত্রিসীমানায়ও আর না থাকা নাঈম শেখকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম যাঁকে সহজাত স্ট্রোকমেকার বলে প্রশংসাও করেছিলেন। তবে আফগানিস্তান ম্যাচের পর সেই অবস্থান বদলে যাওয়ার সুর দল সংশ্লিষ্ট একজনের কথায়, ‘নাঈম স্পিনের বিপক্ষে কাঁপতে শুরু করে। ওকে দেখলেই ওরা (শ্রীলঙ্কা) থিকশানাকে দিয়ে বোলিং শুরু করাবে। ’

লঙ্কান স্পিনারদের রশিদ-মুজিবদের সমকক্ষ মনে না করলেও বাংলাদেশ শিবিরের ভয় তাই আছেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সাতটি টি-টোয়েন্টি খেলে ফেললেও দলের আস্থা অর্জন করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়ও। শ্রীলঙ্কা ম্যাচ ভাবনা থেকে তাঁরও ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা, ‘বিজয় তো ব্যাটেই বল লাগাতে পারছে না। ’ পরিবর্তনের হাওয়ায় এই দুজন যদি উড়ে যান, তাহলে উড়ে আসবেন কারা। গতকাল আইসিসি একাডেমির সেন্টার উইকেটে দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনে ব্যাটিংয়ে দুজনকে গুরুত্ব পেতে দেখে সে আভাস কিছুটা মিলেছেও। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে ওপেন করতে দেখার সম্ভাবনার কথা শোনা গেছে দলীয় সূত্র থেকেও, ‘নিশ্চিত নয় এখনো। তবে মিরাজ-সাব্বিরকে ওপেনিংয়ে দেখা যেতেই পারে।

মিরাজ ২০১৮ সালে ওয়ানডে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ছিলেন লিটন কুমার দাসের ওপেনিং সঙ্গী। সেঞ্চুরি পার্টনারশিপেও অবদান রেখেছিলেন ৩৮ রান করে। এ ছাড়া বিপিএল টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিতই ওপেন করতে দেখা গেছে তাঁকে। তবে সাব্বিরও ফিরেছেন নাঈমের মতো অবস্থায় থেকেই। কোথাও কোনো পারফরম্যান্স ছিল না। তবু অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে পুনর্জন্ম দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন ওপেনারের ভূমিকায়। পরীক্ষিত নন, তবু একাদশে ঢুকে পড়ার বিবেচনায় এগিয়ে।

নাঈমকে নামানোর জুয়াটা কাজে লাগেনি। ব্যথা যেহেতু সর্বাঙ্গেই, তাই সাব্বিরকে নিয়েও সেটি বোধ হয় খেলতেই হচ্ছে!

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব