০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা এজেন্টের

সোনালী ব্যাংকের এজেন্ডদের যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে সার্কুলার দেওয়া হয়েছিল গত দুই বছর থেকে সে সব সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি। এমনকি ব্যাংকের সার্ভার ঠিকমতো কাজ না করায় সেবা প্রদানে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে এজেন্টদের। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে সমস্যার সমাধান না করলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সোনালী এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাসোসিয়েশন (সাবা)। সোমবার সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এই ঘোষণা দেন সাবার সভাপতি যতীন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

এ সময় তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংক আমাদের নিয়োগ দেওয়ার সময় যেসব সরঞ্জামাদি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল তার কিছুই দেয়নি। এমনকি সব সময় ব্যাংকের সার্ভার ডাউন থাকে। সার্ভার ঠিকমতো কাজ না করায় আমরা সেবা-প্রদানে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে গ্রাহক আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এমডি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে বারবার দেখা করে কথা বললেও তারা এর সমাধান করেনি। তারা প্রতিবারই আশ্বাস দিয়ে আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। এজন্য বাধ্য হয়ে আমরা এখন আন্দোলনে নামতে হয়েছে।

এ সময় সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব বাবু বলেন, তিন থেকে চার মাসের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তারা পুলিশ ভেরিফিকেশন সহ সব ধরনের কার্যক্রমই পরিচালনা করেছে। এরপর আমাদের ১ হাজার ২০০ এজেন্ট থেকে ৪৭৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কোনো নোটিশ ছাড়াই সেখান থেকে মাত্র ২২৭ জনকে রেখে বাকিদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমাদেরকে প্রধান কার্যালয়ে ডেকে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। ইংরেজিতে লেখা ওই চুক্তিপত্র আমাদেরকে পড়ে দেখতে দেওয়া হয়নি। জোর করে আমাদের ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরে আমরা জানতে পারি সার্কুলারে যেই কমিশন সহ সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ ছিল চুক্তিপত্রে কৌশলে সেগুলো কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও আমরা কাজ শুরু করেছি। কিন্তু সার্ভার জটিলতা দুই বছর শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের চুক্তি অনুযায়ী কমিশন সমন্বয় না করা সহ নানা কারণে আজকে আমরা পথে বসতে চলেছি। আমরা সোনালী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সারা বাংলাদেশের ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরঞ্জাম বিতরণে দুর্নীতি, সার্ভার জটিলতা সহ নানা কারণে আমাদের আর্থিক ও সম্মান নষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান চাই আমরা।

তিনি আরো বলেন, যদি এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না হয় তাহলে আমাদেরকে এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে বাদ দেয়া হোক। সেক্ষেত্রে গত দুই বছরে আমাদের যেসব আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সেগুলো ফেরত দিতে হবে।

এ সময় সোনালী ব্যাংকের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক নেয়ামতুল্লাহ বলেন, সোনালী ব্যাংক যাদেরকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে তারা সবাই মাস্টার্স পাশ করা। এই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আমরা ভালো চাকরি ব্যবসা বা অন্যান্য পেশায় যেতে পারতাম। আমরা তরুণ উদ্যোক্তা হওয়ার আশায় সোনালী ব্যাংকের এজেন্ট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সমন্বয়হীনতা, সার্ভার জটিলতা ও সরঞ্জাম বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আমরা প্রতিজন এজেন্ট ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে ক্ষতির মাত্রাও বাড়ছে। সার্ভার সমস্যার কারণে আমরা মানুষের সেবা দিতে গিয়ে হয়রানের শিকার হচ্ছি। এমন পরিস্থিতি আপনাদের সকল সমস্যার সমাধান চাই।

তিনি আরো বলেন, সরকার যখন পুনরুদ্ধ না দিয়ে উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, সেখানে সোনালী ব্যাংক আমাদের হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা ২২৭ জন উদ্যোক্তা বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে আছি। তাই সোনালী ব্যাংকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।

এ সময় সংগঠনটির উপদেষ্টা নেয়ামুল আহসান পামেলা বলেন, সার্ভার সমস্যার কারণে সোনালী ব্যাংকের এজেন্টরা মানুষদেরকে সেবা দিতে পারছে না। জালিয়াতি ও প্রতারণা করে সোনালী ব্যাংক আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করেছে। আমরা প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছি। গত দুই বছর থেকে এই ক্ষতি আমরা কিভাবে কাটিয়ে উঠবো? তাই আমাদের এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। না হয় আমরা আন্দোলন, মামলা এবং সরঞ্জাম জালিয়াতির জন্য দুদকের কাছে শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।

বিজনেস বাংলাদেশ/DS

সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা এজেন্টের

প্রকাশিত : ১২:৩৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

সোনালী ব্যাংকের এজেন্ডদের যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে সার্কুলার দেওয়া হয়েছিল গত দুই বছর থেকে সে সব সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি। এমনকি ব্যাংকের সার্ভার ঠিকমতো কাজ না করায় সেবা প্রদানে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে এজেন্টদের। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে সমস্যার সমাধান না করলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঘেরাও দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সোনালী এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাসোসিয়েশন (সাবা)। সোমবার সকালে রাজধানীর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এই ঘোষণা দেন সাবার সভাপতি যতীন্দ্রনাথ বিশ্বাস।

এ সময় তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংক আমাদের নিয়োগ দেওয়ার সময় যেসব সরঞ্জামাদি দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিল তার কিছুই দেয়নি। এমনকি সব সময় ব্যাংকের সার্ভার ডাউন থাকে। সার্ভার ঠিকমতো কাজ না করায় আমরা সেবা-প্রদানে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে গ্রাহক আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এমডি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে বারবার দেখা করে কথা বললেও তারা এর সমাধান করেনি। তারা প্রতিবারই আশ্বাস দিয়ে আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। এজন্য বাধ্য হয়ে আমরা এখন আন্দোলনে নামতে হয়েছে।

এ সময় সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব বাবু বলেন, তিন থেকে চার মাসের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তারা পুলিশ ভেরিফিকেশন সহ সব ধরনের কার্যক্রমই পরিচালনা করেছে। এরপর আমাদের ১ হাজার ২০০ এজেন্ট থেকে ৪৭৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কোনো নোটিশ ছাড়াই সেখান থেকে মাত্র ২২৭ জনকে রেখে বাকিদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমাদেরকে প্রধান কার্যালয়ে ডেকে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। ইংরেজিতে লেখা ওই চুক্তিপত্র আমাদেরকে পড়ে দেখতে দেওয়া হয়নি। জোর করে আমাদের ওই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরে আমরা জানতে পারি সার্কুলারে যেই কমিশন সহ সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ ছিল চুক্তিপত্রে কৌশলে সেগুলো কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও আমরা কাজ শুরু করেছি। কিন্তু সার্ভার জটিলতা দুই বছর শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের চুক্তি অনুযায়ী কমিশন সমন্বয় না করা সহ নানা কারণে আজকে আমরা পথে বসতে চলেছি। আমরা সোনালী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সারা বাংলাদেশের ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরঞ্জাম বিতরণে দুর্নীতি, সার্ভার জটিলতা সহ নানা কারণে আমাদের আর্থিক ও সম্মান নষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান চাই আমরা।

তিনি আরো বলেন, যদি এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না হয় তাহলে আমাদেরকে এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে বাদ দেয়া হোক। সেক্ষেত্রে গত দুই বছরে আমাদের যেসব আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সেগুলো ফেরত দিতে হবে।

এ সময় সোনালী ব্যাংকের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক নেয়ামতুল্লাহ বলেন, সোনালী ব্যাংক যাদেরকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে তারা সবাই মাস্টার্স পাশ করা। এই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আমরা ভালো চাকরি ব্যবসা বা অন্যান্য পেশায় যেতে পারতাম। আমরা তরুণ উদ্যোক্তা হওয়ার আশায় সোনালী ব্যাংকের এজেন্ট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সমন্বয়হীনতা, সার্ভার জটিলতা ও সরঞ্জাম বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে আমাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। আমরা প্রতিজন এজেন্ট ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে ক্ষতির মাত্রাও বাড়ছে। সার্ভার সমস্যার কারণে আমরা মানুষের সেবা দিতে গিয়ে হয়রানের শিকার হচ্ছি। এমন পরিস্থিতি আপনাদের সকল সমস্যার সমাধান চাই।

তিনি আরো বলেন, সরকার যখন পুনরুদ্ধ না দিয়ে উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, সেখানে সোনালী ব্যাংক আমাদের হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা ২২৭ জন উদ্যোক্তা বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে আছি। তাই সোনালী ব্যাংকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।

এ সময় সংগঠনটির উপদেষ্টা নেয়ামুল আহসান পামেলা বলেন, সার্ভার সমস্যার কারণে সোনালী ব্যাংকের এজেন্টরা মানুষদেরকে সেবা দিতে পারছে না। জালিয়াতি ও প্রতারণা করে সোনালী ব্যাংক আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করেছে। আমরা প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছি। গত দুই বছর থেকে এই ক্ষতি আমরা কিভাবে কাটিয়ে উঠবো? তাই আমাদের এই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। না হয় আমরা আন্দোলন, মামলা এবং সরঞ্জাম জালিয়াতির জন্য দুদকের কাছে শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।

বিজনেস বাংলাদেশ/DS