১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

প্রেম ঘুড়ি কার আকাশে উড়ে!

বস্তুত ইন্টারনেট, ইমেইল, ফেইসবুকের এই যুগে বর্তমানে প্রেম শব্দটি সবচেয়ে বেশী আলোচিত। অধিকাংশ কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে ভার্চুয়াল জগতে এসে দিশেহারা হয়ে যায়। এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রেম ছাড়া নিজেদের ব্যকডেটেড মনে করেন।

পাশের বন্ধু-বান্ধুবীরা প্রেম করছেন কিন্তু তার প্রেম হচ্ছে না বলে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
অনেকক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে উভয়ই যখন কাঙ্ক্ষিত প্রেমে জড়াতে ব্যর্থ হন তখনই গান ধরেন ‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো,তার আকাশ কি আমার চেয়েও বড়”।

এসব ভাবনা ছেলে-মেয়ের মাঝে হতাশা সৃষ্টি করে। প্রেমে ব্যর্থ হওয়া ছেলে-মেয়ে উভয়ই ভাবেন, প্রপোজের ক্ষেত্রে কোনো কমতি ছিল কিনা, কাঙ্ক্ষিত প্রেমের পেছনে এতো সময় দেবার পরও কেন কাজ হলো না, ক্যাম্পাস জীবনে একটা প্রেমই হলো না! আমার দ্বারা আদৌ কিছু সম্ভব কি!

সবার প্রেম হচ্ছে কিন্তু আমার কেন হচ্ছে না’ এমন প্রশ্ন মনে জাগার পর থেকে অধিকাংশ ছেলে-মেয়ের মাঝে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। পরিশেষে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রশ্ন জাগে, আমার মতো এতো ভালো রাখতে পারবে কেউ পছন্দের মানুষটিকে।

আবার কিছুদিন আগেও আলোচিত ‘অপরাধ গান’টিও সবার মাঝে সাড়া দিয়ে গেল।

স্যোশাল মাধ্যমে ব্যর্থ ও চ্যাপ্টার ক্লোজড প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।তাদের অধিকাংশই একে অপরকে অপরাধী বলে দোষারোপ করেছিল।
বর্তমানে এটা স্পষ্টত যে,প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা প্রাক্তন কিংবা পছন্দের ব্যাক্তিটিকে না পেয়ে’অপরাধী গানটি’নিয়ে প্রচুর ভালোবাসা দেখিয়েছেন।

আবার প্রেম হওয়ার পরও সম্পর্ক বেশীদিন টেকসই না হওয়ার ফলে প্রেমিক-প্রেমিকা নিজেদের জায়গা থেকে একে অপরের দোষ দিচ্ছেন। অনেকে একালের প্রেমের সাথে সেকালের প্রেমে আসমান-জমিন বিস্তরের কথাও বলেছেন।

আগে প্রেম হতো চিঠির মাধ্যমে যা মন উজাড় করে ভালোবেসে একসাথে আত্মহত্যা করে দুষ্টান্ত স্হাপনে নজির রয়েছে। তবে আজকাল এমন প্রেম-ভালোবাসা সিকিভাগও নেই। প্রযুক্তির কারণে প্রেম হয়েছে সহজলভ্য। ইন্টারনেট,টুইটার,ফেইসবুকে ঢলোঢলো সুন্দর মুখের ছবি দেখে এটা মনে কেউ করে না যে,বাস্তবে ব্যাক্তিটি কতোটুকু ভালো হবেন !!

এভাবেই একে অপরের সাথে প্রেম হয়, ফেইসবুক মেসেঞ্জার,ইমুতে কথা চলে তারপর কিছুদিন রেস্টুরেন্টে সেলফি, ফেইসবুক ওয়ালে ভালোবাসাময় স্ট্যাটাস দিয়ে ভালো চললেও একসময় অবিশ্বাস জন্ম নেয় এবং একটা সময় সম্পর্কের চ্যাপ্টার ক্লোজড হয়ে যায়।
আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে, একটা ছেড়ে অন্য জনের উপর নেতিয়ে পড়া যা প্রেম বিচ্ছেদের অন্যতম অন্তরায়।

প্রেমে পড়ে অনেকে প্রতারণার শিকার হওয়ার পাশাপাশি নিজের জীবনকেও শেষ করে দিচ্ছে। আবার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অনেকে জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সাথে আবার অনেকের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে সবকিছু।

আমাদের চারপাশে এমন অনেক আছে যারা দেখতে খুব স্মার্ট!ভালো গাইতে পারে,কথা বলতে পারে এবং স্বপ্ন দেখে কোনো এক সুদর্শিনীকে কাছে পাবার। গোলাপ কেনা হলো,প্রস্তাব দেওয়া হলো কিন্তু সুদর্শিনী অন্য কাউকে মন দিয়ে বসে আছেন বলে আর প্রেম হলো না।

সেই সমস্ত কাঙ্ক্ষিত প্রেম সরেজমিনে দেখা গেল,অন্যকারোর হাত ধরে আপনার সামনে দিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে কেবল তাদের মুখেই ‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো, তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড়”এই গানটি শোনা যায় এবং স্বপ্ন দেখে ঘুড়ি একদিন ঠিকই তার কাছে ফিরে আসবে।

আবার অনেককে দেখা যায় কাঙ্ক্ষিত সুদর্শনীকে না পেয়ে নিজের জীবনকে বিড়ি, সিগারেট, গাঁজা খেয়ে লিভারপঁচিয়ে ফেলে। অনেককে দেখা যায়, প্রেমকে টিকিয়ে রাখার জন্য নিজের সর্বস্ব উৎসর্গ করে।

আবার কেউ কেউ সন্দেহ দূর করার জন্য একে অপরের আইডির ইউজার / পাসওয়ার্ডও আদানপ্রদান করে !! প্রথম প্রথম কিছুদিন হয়তো সব কিছু ঠিক ভাবেই চলে… তারা ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হতে থাকে… আস্তে আস্তে হাজারো জমে থাকা গোপন কথা শেয়ার করা থেকে শুরু করে নিজেদের অন্তরঙ্গ বা গোপন পিক শেয়ার করতে থাকে !! একটা সময়ে প্রেমিক-প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহুর্তের পিক দিয়ে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলিয়ে “ব্লাকমেইল” করা শুরু করে দেয় একে অপরকে।

আহা! এতোকিছুর পরও আপনার প্রেম কার আকাশে উড়ে এই প্রশ্নটা থেকেই যায়।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

কবি জীবনানন্দ দাশের প্রয়াণ দিবস আজ

প্রেম ঘুড়ি কার আকাশে উড়ে!

প্রকাশিত : ০৮:১০:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বস্তুত ইন্টারনেট, ইমেইল, ফেইসবুকের এই যুগে বর্তমানে প্রেম শব্দটি সবচেয়ে বেশী আলোচিত। অধিকাংশ কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে ভার্চুয়াল জগতে এসে দিশেহারা হয়ে যায়। এসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রেম ছাড়া নিজেদের ব্যকডেটেড মনে করেন।

পাশের বন্ধু-বান্ধুবীরা প্রেম করছেন কিন্তু তার প্রেম হচ্ছে না বলে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যান।
অনেকক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে উভয়ই যখন কাঙ্ক্ষিত প্রেমে জড়াতে ব্যর্থ হন তখনই গান ধরেন ‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো,তার আকাশ কি আমার চেয়েও বড়”।

এসব ভাবনা ছেলে-মেয়ের মাঝে হতাশা সৃষ্টি করে। প্রেমে ব্যর্থ হওয়া ছেলে-মেয়ে উভয়ই ভাবেন, প্রপোজের ক্ষেত্রে কোনো কমতি ছিল কিনা, কাঙ্ক্ষিত প্রেমের পেছনে এতো সময় দেবার পরও কেন কাজ হলো না, ক্যাম্পাস জীবনে একটা প্রেমই হলো না! আমার দ্বারা আদৌ কিছু সম্ভব কি!

সবার প্রেম হচ্ছে কিন্তু আমার কেন হচ্ছে না’ এমন প্রশ্ন মনে জাগার পর থেকে অধিকাংশ ছেলে-মেয়ের মাঝে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। পরিশেষে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রশ্ন জাগে, আমার মতো এতো ভালো রাখতে পারবে কেউ পছন্দের মানুষটিকে।

আবার কিছুদিন আগেও আলোচিত ‘অপরাধ গান’টিও সবার মাঝে সাড়া দিয়ে গেল।

স্যোশাল মাধ্যমে ব্যর্থ ও চ্যাপ্টার ক্লোজড প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।তাদের অধিকাংশই একে অপরকে অপরাধী বলে দোষারোপ করেছিল।
বর্তমানে এটা স্পষ্টত যে,প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা প্রাক্তন কিংবা পছন্দের ব্যাক্তিটিকে না পেয়ে’অপরাধী গানটি’নিয়ে প্রচুর ভালোবাসা দেখিয়েছেন।

আবার প্রেম হওয়ার পরও সম্পর্ক বেশীদিন টেকসই না হওয়ার ফলে প্রেমিক-প্রেমিকা নিজেদের জায়গা থেকে একে অপরের দোষ দিচ্ছেন। অনেকে একালের প্রেমের সাথে সেকালের প্রেমে আসমান-জমিন বিস্তরের কথাও বলেছেন।

আগে প্রেম হতো চিঠির মাধ্যমে যা মন উজাড় করে ভালোবেসে একসাথে আত্মহত্যা করে দুষ্টান্ত স্হাপনে নজির রয়েছে। তবে আজকাল এমন প্রেম-ভালোবাসা সিকিভাগও নেই। প্রযুক্তির কারণে প্রেম হয়েছে সহজলভ্য। ইন্টারনেট,টুইটার,ফেইসবুকে ঢলোঢলো সুন্দর মুখের ছবি দেখে এটা মনে কেউ করে না যে,বাস্তবে ব্যাক্তিটি কতোটুকু ভালো হবেন !!

এভাবেই একে অপরের সাথে প্রেম হয়, ফেইসবুক মেসেঞ্জার,ইমুতে কথা চলে তারপর কিছুদিন রেস্টুরেন্টে সেলফি, ফেইসবুক ওয়ালে ভালোবাসাময় স্ট্যাটাস দিয়ে ভালো চললেও একসময় অবিশ্বাস জন্ম নেয় এবং একটা সময় সম্পর্কের চ্যাপ্টার ক্লোজড হয়ে যায়।
আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে, একটা ছেড়ে অন্য জনের উপর নেতিয়ে পড়া যা প্রেম বিচ্ছেদের অন্যতম অন্তরায়।

প্রেমে পড়ে অনেকে প্রতারণার শিকার হওয়ার পাশাপাশি নিজের জীবনকেও শেষ করে দিচ্ছে। আবার প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অনেকে জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সাথে আবার অনেকের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে সবকিছু।

আমাদের চারপাশে এমন অনেক আছে যারা দেখতে খুব স্মার্ট!ভালো গাইতে পারে,কথা বলতে পারে এবং স্বপ্ন দেখে কোনো এক সুদর্শিনীকে কাছে পাবার। গোলাপ কেনা হলো,প্রস্তাব দেওয়া হলো কিন্তু সুদর্শিনী অন্য কাউকে মন দিয়ে বসে আছেন বলে আর প্রেম হলো না।

সেই সমস্ত কাঙ্ক্ষিত প্রেম সরেজমিনে দেখা গেল,অন্যকারোর হাত ধরে আপনার সামনে দিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে কেবল তাদের মুখেই ‘ঘুড়ি তুমি কার আকাশে উড়ো, তার আকাশ কি আমার চেয়ে বড়”এই গানটি শোনা যায় এবং স্বপ্ন দেখে ঘুড়ি একদিন ঠিকই তার কাছে ফিরে আসবে।

আবার অনেককে দেখা যায় কাঙ্ক্ষিত সুদর্শনীকে না পেয়ে নিজের জীবনকে বিড়ি, সিগারেট, গাঁজা খেয়ে লিভারপঁচিয়ে ফেলে। অনেককে দেখা যায়, প্রেমকে টিকিয়ে রাখার জন্য নিজের সর্বস্ব উৎসর্গ করে।

আবার কেউ কেউ সন্দেহ দূর করার জন্য একে অপরের আইডির ইউজার / পাসওয়ার্ডও আদানপ্রদান করে !! প্রথম প্রথম কিছুদিন হয়তো সব কিছু ঠিক ভাবেই চলে… তারা ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হতে থাকে… আস্তে আস্তে হাজারো জমে থাকা গোপন কথা শেয়ার করা থেকে শুরু করে নিজেদের অন্তরঙ্গ বা গোপন পিক শেয়ার করতে থাকে !! একটা সময়ে প্রেমিক-প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহুর্তের পিক দিয়ে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলিয়ে “ব্লাকমেইল” করা শুরু করে দেয় একে অপরকে।

আহা! এতোকিছুর পরও আপনার প্রেম কার আকাশে উড়ে এই প্রশ্নটা থেকেই যায়।