০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

সাঁথিয়ায় ১০ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

পাবনার সাঁথিয়ায় ৫ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। প্রতিবছরই এই সাঁকোটি ভেঙ্গে যায় আর গ্রামবাসীরা মিলে প্রতিবারই চাঁদা তুলে পুণঃনির্মাণ করে। স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলছে তাদের বছরের পর বছর। দেখার যেন কেউ নেই।
জানা যায়, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে বড়াল নদীর শাখা বলেশ্বর নদীটি চিনানাড়ীÑ বিলকলমী’র উপর দিয়ে বয়ে গেছে। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে ওই নদীর উপর গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে এলাকার নলভাঙ্গা,চিনিনাড়ী সেলন্দা,চরাচেথুলিয়া,বিলকলমী,খামার সানিলাসহ অন্তত ১০ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পারাপার হয়।

এমনকি আশপাশের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রায় ১ শ’ ফুট দীর্ঘ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চিনিনাড়ী দাখিল মাদরাসা , বিলকলমী প্রাথমিক বিদ্যালয় ,পার্শ্ববর্তী বেড়া আল হেরা স্কুল এন্ড কলেজ, বেড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ,সাঁথিয়া সরকারি কলেজ,বাঘাবাড়ী, শাহজাদপুর স্কুল এন্ড কলেজে যাতায়াত করে। ফলে প্রায়ই ঘটে কোন না কোন দুর্ঘটনা। কৃষকেদের কৃষিপণ্য পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা ওই একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। নইলে অনেক দুর ঘুরে মাটির রাস্তা দিয়ে তাদের যেতে হয়।

আশপাশের বিভিন্ন হাট বাজারে যেতে কৃষিপণ্য ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। এলাকাবাসীর বহুদিনের দাবী এখানে একটি ব্রিজের। তারা জানায়,ওখানে একটি ব্রিজ হলে শুধু এলাকারই উন্নয়ন নয় সাঁথিয়া,শাহজাদপুর ও বেড়া উপজেলার এবং পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের সাথে সহজেই যোগাযোগ সম্ভব হবে।ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চিনিনাড়ী ও বিলকলমী গ্রামের গোলজার প্রাং’র বাড়ির ওপারে আব্দুল হাই এর বাড়ির সামনে পাকা সড়ক পর্যন্ত গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি নতুন করে মেরামত করছেন। সেখানে তাদেরকে তদারকি করছেন চিনিনাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও চিনিনাড়ী দাখিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছরই নিজেরাই গ্রামবাসী মিলে চাঁদা তুলে ও সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ সাঁকোটি তৈরি করি। তবে সরকারি সহায়তায় একটি ব্রিজ হলে ১০ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপকৃত হবে। অপরদিকে সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যেমে সাঁকো তৈরি করতে আসা চিনিনাড়ী গ্রামের সন্তেষ জানান, স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিবছরই আমরা সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এখানে সাঁকো তৈরি করি। আমাদের দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে নাগডেমড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও নাগডেমড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জানান, ওখানে একটি ব্রিজ হওয়া দরকার। এতে করে মানুষের গ্রাম ও শহরের সাথে খুব সহজেই যোগাযোগের উন্নয়ন হবে। আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কথা বলে অতিদ্রুত একটি ব্রিজের ব্যবস্থা করবো ।

সাঁথিয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী শহিদুল্লাহ জানান ,আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরেই ওই প্রত্যন্ত এলাকাকে সড়ক,ব্রিজের উন্নয়ন করে শহরে পরিণত করবো যা দৃশ্যমান হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছি সরজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার।

বিবি/ইএম

ট্যাগ :

মেঘনা  উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক  নয়ন ও শহীদুলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সাঁথিয়ায় ১০ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

প্রকাশিত : ০৪:৪৮:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০১৯

পাবনার সাঁথিয়ায় ৫ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। প্রতিবছরই এই সাঁকোটি ভেঙ্গে যায় আর গ্রামবাসীরা মিলে প্রতিবারই চাঁদা তুলে পুণঃনির্মাণ করে। স্বাধীনতার পর থেকে এভাবেই চলছে তাদের বছরের পর বছর। দেখার যেন কেউ নেই।
জানা যায়, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে বড়াল নদীর শাখা বলেশ্বর নদীটি চিনানাড়ীÑ বিলকলমী’র উপর দিয়ে বয়ে গেছে। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে ওই নদীর উপর গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে এলাকার নলভাঙ্গা,চিনিনাড়ী সেলন্দা,চরাচেথুলিয়া,বিলকলমী,খামার সানিলাসহ অন্তত ১০ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পারাপার হয়।

এমনকি আশপাশের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রায় ১ শ’ ফুট দীর্ঘ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চিনিনাড়ী দাখিল মাদরাসা , বিলকলমী প্রাথমিক বিদ্যালয় ,পার্শ্ববর্তী বেড়া আল হেরা স্কুল এন্ড কলেজ, বেড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ,সাঁথিয়া সরকারি কলেজ,বাঘাবাড়ী, শাহজাদপুর স্কুল এন্ড কলেজে যাতায়াত করে। ফলে প্রায়ই ঘটে কোন না কোন দুর্ঘটনা। কৃষকেদের কৃষিপণ্য পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা ওই একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। নইলে অনেক দুর ঘুরে মাটির রাস্তা দিয়ে তাদের যেতে হয়।

আশপাশের বিভিন্ন হাট বাজারে যেতে কৃষিপণ্য ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। এলাকাবাসীর বহুদিনের দাবী এখানে একটি ব্রিজের। তারা জানায়,ওখানে একটি ব্রিজ হলে শুধু এলাকারই উন্নয়ন নয় সাঁথিয়া,শাহজাদপুর ও বেড়া উপজেলার এবং পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের সাথে সহজেই যোগাযোগ সম্ভব হবে।ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চিনিনাড়ী ও বিলকলমী গ্রামের গোলজার প্রাং’র বাড়ির ওপারে আব্দুল হাই এর বাড়ির সামনে পাকা সড়ক পর্যন্ত গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি নতুন করে মেরামত করছেন। সেখানে তাদেরকে তদারকি করছেন চিনিনাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও চিনিনাড়ী দাখিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছরই নিজেরাই গ্রামবাসী মিলে চাঁদা তুলে ও সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ সাঁকোটি তৈরি করি। তবে সরকারি সহায়তায় একটি ব্রিজ হলে ১০ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপকৃত হবে। অপরদিকে সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যেমে সাঁকো তৈরি করতে আসা চিনিনাড়ী গ্রামের সন্তেষ জানান, স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিবছরই আমরা সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এখানে সাঁকো তৈরি করি। আমাদের দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে নাগডেমড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও নাগডেমড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ জানান, ওখানে একটি ব্রিজ হওয়া দরকার। এতে করে মানুষের গ্রাম ও শহরের সাথে খুব সহজেই যোগাযোগের উন্নয়ন হবে। আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কথা বলে অতিদ্রুত একটি ব্রিজের ব্যবস্থা করবো ।

সাঁথিয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী শহিদুল্লাহ জানান ,আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরেই ওই প্রত্যন্ত এলাকাকে সড়ক,ব্রিজের উন্নয়ন করে শহরে পরিণত করবো যা দৃশ্যমান হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছি সরজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার।

বিবি/ইএম