- “যদি চালু করতেই হয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, তবে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ আনুন, যেন সুযোগ পায় সর্বজন”,
- “ডিজিটালাইজেশনের সুযোগ চাই সবাই,তবে কাউকে বঞ্চিত করে নয়”,
- “যে দেশে লক্ষমানুষ অনাহারে থাকি, সে দেশে অনলাইন ক্লাস শুভঙ্করের ফাঁকি”,
- ” ৬০-৭০% শিক্ষার্থীবাদ দিয়ে, অনলাইনে ক্লাসের প্রহসন বন্ধ করো”
এমনই সব চমকপ্রদ স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজ নিজ টাইমলাইনে ছবি শেয়ার দিয়ে অনলাইনে ক্লাস বন্ধে প্রতিবাদে নেমেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ( ববি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তীব্র সেশন জটের। পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ি এ মাসের শুরুর দিকে পরীক্ষামূলক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ টি বিভাগের চেয়ারম্যানের সাথে এক আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত এতে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ছাদেকুল আরেফিন বিভাগীয় প্রধানদের নির্দেশনা দেন পরীক্ষামূলক অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চালু করার।
এর আগে কয়েকটি বিভাগ পরীক্ষামূলক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলে শিক্ষার্থীদের আশানুরূপ উপস্থিতি নিশ্চিত হয়নি বলে জানা গেছে।
ব্যতিক্রমী এই আন্দোলনে সক্রিয় মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলিসা মুনতাজ বলেন, প্রায় অর্ধেক পৃথিবীকে গ্রাস করে ফেলেছে করোনা নামক মহামারী ভাইরাস। বাংলাদেশে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় হাজার মানুষ। জরুরি অবস্থা বিবেচনায় যখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়,আমরা শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরেছি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাসস্থান শহরকেন্দ্রিক নয়। গ্রামে অবস্থান করায় সেখানে নেটওয়ার্ক স্পিড খুবই কম। জুম এপস ব্যবহার করে ১ঘন্টার একটি ক্লাসে প্রায় ৩০০-৩৫০ মেগাবাইট খরচ হয়। অনেকের পক্ষে মেগাবাইট কেনার মত আর্থিক সঙ্গতি নেই। কিছু শিক্ষার্থীর জন্যে স্মার্টফোন চালনাও এখন দুঃসাধ্য।এসব সমস্যা বিবেচনায় সামাজিক দূরত্বের কথা চিন্তা করে আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা অব্দি ববি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অনলাইনে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করছি। তিনি আরো বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এই প্রতিবাদের মাধ্যমে প্রশাসনকে এহেন অমানবিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে দুঃস্থ শিক্ষার্থীদের পাশে আরো মানবিকতার সহিত দাঁড়ানোর আহবান জানাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাড়ি প্রত্যন্ত এলাকায়। গ্রামে নেট পায় না। আবার এমবি কেনার মতো আর্থিক অবস্থাও আমার নেই। এমতাবস্থায় অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যৌক্তিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নিবেন।