০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

নেপালে ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১৭০

নেপালে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০ জনে পৌঁছেছে। টানা বর্ষণে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশজুড়ে সৃষ্ট এই দুর্যোগে তারা প্রাণ হারান। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেক মানুষ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া রেকর্ড-ব্রেকিং প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ১৭০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আরও ৪২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নেপাল পুলিশের মতে, দুর্যোগে আরও ১০১ জন আহত হয়েছেন এবং আরও ৩ হাজার ৬৬১ জনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এবার পানিবিদ্যা ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধীনস্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিভাগ আবহাওয়া ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং দুর্যোগের ঝুঁকির বিষয়ে নেপালের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আগে থেকেই সতর্ক করেছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এরপরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

চলমান বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এবং ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কর্মকর্তারা এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিত।

কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, পানিবিদ্যা ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যতেও বর্ষার ধরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আগে সেপ্টেম্বর মাসেই বর্ষা মৌসুমের অবসান ঘটত, তবে ২০১৩ সাল থেকে এটি অক্টোবর পর্যন্ত বিলম্বিত হয়েছে।

এই প্রবণতা কেবল নেপালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এই অঞ্চলের অনেক দেশই বর্ধিত বর্ষাকাল প্রত্যক্ষ করছে। বিশেষজ্ঞরা এই বছরও অনুরূপ বিলম্বের পূর্বাভাস দিয়েছেন।

মূলত বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনশীল ধরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অংশ ক্রমবর্ধমান অনিয়মিত আবহাওয়ার দিকে পরিচালিত করেছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে চরম বৃষ্টিপাত থেকে দীর্ঘ খরা গত দেড় দশক ধরে নেপালজুড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, এতে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং তাদের জীবিকাও হুমকির মুখে পড়েছে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ডা. ইন্দিরা কান্ডেল বলছেন, ‘আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাস দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য অত্যাবশ্যক। আবহাওয়া অফিস সময়মত পূর্বাভাস এবং আপডেট জারি করেছে, কিন্তু আসল সমস্যা হলো- সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কীভাবে সেই তথ্য ব্যাখ্যা করে এবং কাজ করে।’

কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, চলমান বন্যায় কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং অন্যান্য বিভিন্ন জেলার অনেক অংশ তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভূমিধস এবং বন্যায় বাড়িঘর, যানবাহন এবং সেতুর পাশাপাশি মহাসড়কও ধ্বংস হয়ে গেছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

রংপুরে রেল স্টেশনে বৈষম্য উন্নয়ন হয়নি,প্রতিবাদে অবরোধ

নেপালে ভয়াবহ বন্যা-ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১৭০

প্রকাশিত : ১১:২০:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নেপালে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০ জনে পৌঁছেছে। টানা বর্ষণে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশজুড়ে সৃষ্ট এই দুর্যোগে তারা প্রাণ হারান। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেক মানুষ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া রেকর্ড-ব্রেকিং প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ১৭০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আরও ৪২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নেপাল পুলিশের মতে, দুর্যোগে আরও ১০১ জন আহত হয়েছেন এবং আরও ৩ হাজার ৬৬১ জনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এবার পানিবিদ্যা ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধীনস্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিভাগ আবহাওয়া ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং দুর্যোগের ঝুঁকির বিষয়ে নেপালের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আগে থেকেই সতর্ক করেছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এরপরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

চলমান বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এবং ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কর্মকর্তারা এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিত।

কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, পানিবিদ্যা ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যতেও বর্ষার ধরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আগে সেপ্টেম্বর মাসেই বর্ষা মৌসুমের অবসান ঘটত, তবে ২০১৩ সাল থেকে এটি অক্টোবর পর্যন্ত বিলম্বিত হয়েছে।

এই প্রবণতা কেবল নেপালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এই অঞ্চলের অনেক দেশই বর্ধিত বর্ষাকাল প্রত্যক্ষ করছে। বিশেষজ্ঞরা এই বছরও অনুরূপ বিলম্বের পূর্বাভাস দিয়েছেন।

মূলত বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনশীল ধরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের একটি অংশ ক্রমবর্ধমান অনিয়মিত আবহাওয়ার দিকে পরিচালিত করেছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে চরম বৃষ্টিপাত থেকে দীর্ঘ খরা গত দেড় দশক ধরে নেপালজুড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, এতে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং তাদের জীবিকাও হুমকির মুখে পড়েছে।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ডা. ইন্দিরা কান্ডেল বলছেন, ‘আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাস দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য অত্যাবশ্যক। আবহাওয়া অফিস সময়মত পূর্বাভাস এবং আপডেট জারি করেছে, কিন্তু আসল সমস্যা হলো- সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কীভাবে সেই তথ্য ব্যাখ্যা করে এবং কাজ করে।’

কাঠমান্ডু পোস্ট বলছে, চলমান বন্যায় কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং অন্যান্য বিভিন্ন জেলার অনেক অংশ তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভূমিধস এবং বন্যায় বাড়িঘর, যানবাহন এবং সেতুর পাশাপাশি মহাসড়কও ধ্বংস হয়ে গেছে।