ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চলছেই। সবশেষ ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী অবরুদ্ধ গাজায় রোববার দিনভর হামলা চালিয়ে আরও ৩৩ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এ সময় লেবাননেও হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। এতে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ ছাড়া ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি জনপ্রিয় বাজারে মার্কিন বাহিনীর বোমা হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন।
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ৫১ হাজার ২০১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আহত হওয়া আরও ১৪৫ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৬৯ জনে পৌঁছেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮২৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪ হাজার ৮২৮ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৫ মাসের আগ্রাসনের পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে গেল মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
ডিএস…