হজের মূল কার্যক্রম পালন করা হয় জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত। হজ ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল রাখতে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে নির্দিষ্ট নিয়মে হাজিদের অনুমতি দিয়ে থাকে সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়।
বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় দেড় মাস আগে থেকেই সৌদি আরবে যাত্রা করেন হাজিরা। বাংলাদেশ থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয় জিলকদ মাসের প্রথম থেকেই।
হজ করতে ইচ্ছুকদের ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ইহরামের নিয়ত করা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেই ‘মিকাত’ (ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান)।
প্রায় সবগুলো হজ ফ্লাইটে মিকাতের সীমানা পার হওয়ার সময় ইহরামের নিয়ত করার কথা বলা হয় কিন্তু ওই সময় অনেকে ভিন্ন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন আবার কেউ কেউ ঘুমিয়ে পড়েন। আর বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে।
তবে যদি হজযাত্রী জানতে পারেন যে সৌদি আরবে তার প্রথম গন্তব্য মদিনায়, তাহলে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ইহরাম করতে হবে না। যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম করতে হবে।
সৌদি আরবে বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে হবে। এ সময় ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। কোনও কিছুতে ধৈর্য হারানো যাবে না। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে মুয়াল্লিমের পক্ষ থেকে হজযাত্রীদের গ্রহণ করা হবে।
এসময় আরবিতে লেখা মোয়াল্লেমের নম্বরসহ কবজিবন্ধনী (বেল্ট) দেওয়া হবে, তা হাতে পরে নিতে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
এরপর হজযাত্রীরা মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন মুয়াল্লিমের গাড়ি তাদের জেদ্দা থেকে সেখানে নামিয়ে দেবে। জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া (লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…) পড়ুন।
পবিত্র মক্কা শহরে পৌঁছার পর আপনি এ দোয়া পড়বেন, হে আল্লাহ! আমাকে এ পবিত্র শহরে ঈমান, নিরাপত্তা ও মঙ্গলসহকারে পৌঁছে দিন। নিরাপদে থাকার তাওফিক দিন এবং এ নগরীর সম্মান ও আদব রক্ষার তাওফিক দান করুন।
বিমানের দীর্ঘ সফরের পর শরীরে কিছুটা ক্লান্তিভাব আসাটা স্বাভাবিক। তাই জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছে থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। নামাজের সময় হলে সময়মতো নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে ওমরাহ পালন করুন, আর দলবদ্ধভাবে ওমরার নিয়ত করে থাকলে সবাই মিলে ওমরা আদায় করুন।
তবে ওমরাহ পালনের আগে অবশ্যই ওমরাহর নিয়ম এবং এর ফরজ ও ওয়াজিবগুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। পবিত্র কোরআনে তিনি হজের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, আর মানুষের ওপর কর্তব্য হলো আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ করা। এটা তার জন্য যে বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছোনোর সামর্থ্য রাখে। (সূরা আল ইমরান, আয়াত : ৯৭)
অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা আল্লাহর জন্য হজ ও ওমরাহ পূর্ণ করো। (সূরা বাকারা, আয়াত :১৯৬)
হজের ফজিলত সম্পর্কে এক হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক উমরা আরেক উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহর ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়। আর হজ্জে মাবরুরের (কবুল হজ) প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩, মুসলিম, হাদিস : ১২১)
বিজনেস বাংলাদেশ/একে