০৯:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার: ৬

বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে রেলভ্রমন একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে সকলের নিকট সুপরিচিত। সাচ্ছন্দে যাতায়াতের জন্য ট্রেনের কোন বিকল্প নাই। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনসাধারণের বড় একটি অংশ নিরাপদ যাত্রার মাধ্যম হিসেবে ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতিকারী ও টিকেট কালোবাজারি চক্রের দৌরাত্মে স্বস্তিকর রেলভ্রমনের টিকেট প্রাপ্তি অনেক সাধারণ জনগণের জন্য অস্বস্তি, চিন্তা ও ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে টিকেট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারে অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রি হতে দেখা যায়।

টিকেট কালোবাজারিরা বিভিন্ন কৌশলে ট্রেনের টিকেট অগ্রিম সংগ্রহ করে অবৈধভাবে নিজেদের কাছে মজুদ করে রেখে সাধারণ যাত্রীদের নিকট ২/৩ গুন বেশি দামে টিকেট বিক্রি করছে। সাধারণ যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকেট না পাওয়া এবং টিকেট কালোবাজারী কর্তৃক অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রয়ের বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হয়।

বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃত ট্রেনের টিকেট কালোবাজির চক্রের সদস্যদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র‍্যাব-৩।

এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ২৬ মার্চ ২০২৫ ইং রাতে রাজধানীর খিলগাঁও বনশ্রী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারী চক্রের সদস্য ১। মোঃ রিয়াজুল ইসলাম (২৯)’কে গ্রেফতার করা হয়।

দুপুরে র‍্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামিরা জানায়,তারা সংঘবদ্ধ টিকেট কালোবাজারী চক্রের সদস্য। ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকেটের বিপুল চাহিদা থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ পরস্পর যোগসাজশে অনলাইনে অল্পমূল্যে টিকেট ক্রয় করে টিকেট প্রত্যাশী সাধারণ মানুষের নিকট উচ্চমূল্যে গোপনে টিকেট বিক্রি করে।

গ্রেফতারকৃত রিয়াজুল এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে র‍্যাব-১১ এর সহায়তায় ট্রেনের টিকেট কালোবাজারী চক্রের মূলহোতা মোঃ সেলিম’কে রাজধানীর ডেমরা থানার ডগাইর বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

তার দেওয়াশতথ্যমতে ২৭ মার্চ ২০২৫ তারিখ সকালে র‍্যাব-৩ কর্তৃক পৃথক অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন হতে উপরোক্ত আসামিদের সহযোগী কালোবাজারী ট্রেনের টিকেট বিক্রয়কারী সদস্য সোহেল মিয়া (৩৬)তৌফিক (২৮)মাইনুল ইসলাম (২৪)রাকাতুল ইসলাম (১৯)দের গ্রেফতার করা হয়।

ধৃত আসামিদের নিকট হতে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের সর্বমোট ৩১৪টি সিটের ৮২টি ট্রেনের টিকেট, বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানীর ৯৫টি সীম, ১০টি মোবাইল ফোন, ০১টি এনআইডি, ১টি ঘড়ি, ৪টি এটিএম কার্ড, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর ১টি কি-বোর্ড, ০১টি মাউস এবং নগদ ৭১০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।

তারা মূলত ট্রেন ছাড়ার ৩/৪ ঘন্টা আগে থেকে অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রির তৎপরতা শুরু করে। ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনাতে থাকে মজুদকৃত কালোবাজারি টিকেটের দাম তত বাড়তে থাকে। তারা সাধারণত ২/৩ গুন মূল্যে টিকেট বিক্রি করে থাকে। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে টিকেটের দাম আরও বাড়িয়ে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা তিস্তা এক্সপ্রেস, এগারো সিন্ধু প্রভাতি, মহানগর প্রভাতী, দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল, জামালপুর এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেস এই সকল ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করে থাকে।

ধৃত আসামি সেলিম মাঠপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত অন্য সদস্যদের রেলষ্টেশন এলাকায় নিয়োগ করে যাদের টিকেট প্রয়োজন তাদের খুজে বের করে এবং তাদের নিকট উচ্চমূল্যে টিকিট বিক্রয় করে।ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

ডিএস//

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এর অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে মৃতের পরিবারের মাঝে দের কোটি টাকার চেক বিতরণ

ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার: ৬

প্রকাশিত : ০৫:৫৩:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে রেলভ্রমন একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে সকলের নিকট সুপরিচিত। সাচ্ছন্দে যাতায়াতের জন্য ট্রেনের কোন বিকল্প নাই। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনসাধারণের বড় একটি অংশ নিরাপদ যাত্রার মাধ্যম হিসেবে ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতিকারী ও টিকেট কালোবাজারি চক্রের দৌরাত্মে স্বস্তিকর রেলভ্রমনের টিকেট প্রাপ্তি অনেক সাধারণ জনগণের জন্য অস্বস্তি, চিন্তা ও ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনলাইনে টিকেট পাওয়া না গেলেও কালোবাজারে অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রি হতে দেখা যায়।

টিকেট কালোবাজারিরা বিভিন্ন কৌশলে ট্রেনের টিকেট অগ্রিম সংগ্রহ করে অবৈধভাবে নিজেদের কাছে মজুদ করে রেখে সাধারণ যাত্রীদের নিকট ২/৩ গুন বেশি দামে টিকেট বিক্রি করছে। সাধারণ যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকেট না পাওয়া এবং টিকেট কালোবাজারী কর্তৃক অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রয়ের বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হয়।

বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃত ট্রেনের টিকেট কালোবাজির চক্রের সদস্যদের নিকট থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র‍্যাব-৩।

এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ২৬ মার্চ ২০২৫ ইং রাতে রাজধানীর খিলগাঁও বনশ্রী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারী চক্রের সদস্য ১। মোঃ রিয়াজুল ইসলাম (২৯)’কে গ্রেফতার করা হয়।

দুপুরে র‍্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের জানান,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামিরা জানায়,তারা সংঘবদ্ধ টিকেট কালোবাজারী চক্রের সদস্য। ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকেটের বিপুল চাহিদা থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ পরস্পর যোগসাজশে অনলাইনে অল্পমূল্যে টিকেট ক্রয় করে টিকেট প্রত্যাশী সাধারণ মানুষের নিকট উচ্চমূল্যে গোপনে টিকেট বিক্রি করে।

গ্রেফতারকৃত রিয়াজুল এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে র‍্যাব-১১ এর সহায়তায় ট্রেনের টিকেট কালোবাজারী চক্রের মূলহোতা মোঃ সেলিম’কে রাজধানীর ডেমরা থানার ডগাইর বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

তার দেওয়াশতথ্যমতে ২৭ মার্চ ২০২৫ তারিখ সকালে র‍্যাব-৩ কর্তৃক পৃথক অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন হতে উপরোক্ত আসামিদের সহযোগী কালোবাজারী ট্রেনের টিকেট বিক্রয়কারী সদস্য সোহেল মিয়া (৩৬)তৌফিক (২৮)মাইনুল ইসলাম (২৪)রাকাতুল ইসলাম (১৯)দের গ্রেফতার করা হয়।

ধৃত আসামিদের নিকট হতে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের সর্বমোট ৩১৪টি সিটের ৮২টি ট্রেনের টিকেট, বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানীর ৯৫টি সীম, ১০টি মোবাইল ফোন, ০১টি এনআইডি, ১টি ঘড়ি, ৪টি এটিএম কার্ড, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর ১টি কি-বোর্ড, ০১টি মাউস এবং নগদ ৭১০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।

তারা মূলত ট্রেন ছাড়ার ৩/৪ ঘন্টা আগে থেকে অধিক মূল্যে টিকেট বিক্রির তৎপরতা শুরু করে। ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনাতে থাকে মজুদকৃত কালোবাজারি টিকেটের দাম তত বাড়তে থাকে। তারা সাধারণত ২/৩ গুন মূল্যে টিকেট বিক্রি করে থাকে। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে টিকেটের দাম আরও বাড়িয়ে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা তিস্তা এক্সপ্রেস, এগারো সিন্ধু প্রভাতি, মহানগর প্রভাতী, দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল, জামালপুর এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেস এই সকল ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করে থাকে।

ধৃত আসামি সেলিম মাঠপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত অন্য সদস্যদের রেলষ্টেশন এলাকায় নিয়োগ করে যাদের টিকেট প্রয়োজন তাদের খুজে বের করে এবং তাদের নিকট উচ্চমূল্যে টিকিট বিক্রয় করে।ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

ডিএস//