০৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

হবিগঞ্জে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা

সিলেট ও সুনামগঞ্জের পর এবার বন্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে হবিগঞ্জে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারায় বৃষ্টির ফলে কুশিয়ারা-খোয়াই-কালনীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছুস্থানে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।

জানা যায়- গত কয়েকদিনের টানা উজানের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারায় বৃষ্টির ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর অংশে কালনী-কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ডুবে ও পাহাড়পুর এলাকার কৈয়ারঢালা রাস্তা ভেঙে পানি হাওরে প্রবেশ করছে। এতে বদলপুরের পাহাড়পুর, পিরোজপুর, কাকাইলছেও এবং পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার কাকাইলছেও সরকারি আশ্রয়ন কেন্দ্রে পানি ওঠায় আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ৬০টি পরিবার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যে আজমিরীগঞ্জ সরকারি কলেজ, মিয়াধন মিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, পাহাড়পুর কলেজ, কাকাইলছেও মমচাঁন ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যা কবলিত গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করে প্রশাসন নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।

এদিকে নবীগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, পাহাড়পুর,পারকুল, দুর্গাপুর, উমরপুর গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার দীঘলবাকের মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর ও গালিমপুর গ্রাম পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের কসবা ইনাতগঞ্জ সড়ক ডুবে দ্রত গতিতে পানি প্রবেশ করছে বিভিন্ন গ্রামে। এছাড়া করগাঁও ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি দ্রত হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন সাধারণ মানুষ।

এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুশিয়ারা-কালনী ও খোয়াই নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নবীগঞ্জে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে এবং আজমিরীগঞ্জে রাস্তা ভেঙে পানি ডুকছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ বলেন- সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে, পানি দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে প্রবেশ করছে। পানিবন্দি অবস্থায় যারা আছেন তাদেরকে উদ্ধারে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা সালেহা সুমী জানান- বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে, আমরা বন্যা কবলিত মানুষদের নিরাপদে আনার জন্য চেষ্টা করছি, অনেক মানুষকে নৌকা দিয়ে নিরাপদে আনা হয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, কুশিয়ারা নদী বৃদ্ধি পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর, রাধাপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে ও ইনাতগঞ্জ-কসবা সড়ক ডুবে পানি বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করছে। ইতিমধ্যে নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

 

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

হবিগঞ্জে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা

প্রকাশিত : ০৭:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২

সিলেট ও সুনামগঞ্জের পর এবার বন্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে হবিগঞ্জে। উজানের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারায় বৃষ্টির ফলে কুশিয়ারা-খোয়াই-কালনীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছুস্থানে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।

জানা যায়- গত কয়েকদিনের টানা উজানের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারায় বৃষ্টির ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর অংশে কালনী-কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ডুবে ও পাহাড়পুর এলাকার কৈয়ারঢালা রাস্তা ভেঙে পানি হাওরে প্রবেশ করছে। এতে বদলপুরের পাহাড়পুর, পিরোজপুর, কাকাইলছেও এবং পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার কাকাইলছেও সরকারি আশ্রয়ন কেন্দ্রে পানি ওঠায় আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ৬০টি পরিবার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যে আজমিরীগঞ্জ সরকারি কলেজ, মিয়াধন মিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, পাহাড়পুর কলেজ, কাকাইলছেও মমচাঁন ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যা কবলিত গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করে প্রশাসন নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।

এদিকে নবীগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, পাহাড়পুর,পারকুল, দুর্গাপুর, উমরপুর গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। উপজেলার দীঘলবাকের মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর ও গালিমপুর গ্রাম পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের কসবা ইনাতগঞ্জ সড়ক ডুবে দ্রত গতিতে পানি প্রবেশ করছে বিভিন্ন গ্রামে। এছাড়া করগাঁও ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি দ্রত হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন সাধারণ মানুষ।

এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুশিয়ারা-কালনী ও খোয়াই নদীর পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নবীগঞ্জে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে এবং আজমিরীগঞ্জে রাস্তা ভেঙে পানি ডুকছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ বলেন- সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে, পানি দীঘলবাক ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে প্রবেশ করছে। পানিবন্দি অবস্থায় যারা আছেন তাদেরকে উদ্ধারে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা সালেহা সুমী জানান- বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে, আমরা বন্যা কবলিত মানুষদের নিরাপদে আনার জন্য চেষ্টা করছি, অনেক মানুষকে নৌকা দিয়ে নিরাপদে আনা হয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, কুশিয়ারা নদী বৃদ্ধি পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর, রাধাপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে ও ইনাতগঞ্জ-কসবা সড়ক ডুবে পানি বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করছে। ইতিমধ্যে নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর