০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পাবনায় আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আওয়ামীলীগ সভাপতি সম্পাদকসহ ১০৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা

পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিবর্ষণে দুই ছাত্র নিহত হবার ঘটনায় ভাঁড়ারা ইউনিয়নের আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে নিহত পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিটিউটের ছাত্র জাহিদুল ইসলামে (১৮) বাবা মো. দুলাল উদ্দিন বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী।
মামলায় পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, পৌর মেয়র শরিফ উদ্দিন সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ ১০৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ার নির্দেশ দেবার অভিযোগে আবু সাইদ খানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এজাহার বলছে, ঘটনার দিন ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল। এ সময় মামলার অভিযুক্ত আসামীরা লোহার রড, বাঁশের লাঠি ও দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে। বিনা উস্কানিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এতে ছাত্র জনতা ভয়ে দিকবিদিক ছুটতে থাকে। এ সময় তাঁর ছেলে জাহিদুলসহ ছাত্ররা আন্দোলনরত অবস্থায় ছিলো। এর এক পর্যায়ে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদের নির্দেশে প্রকশ্যে দুজন সহ একদল সন্ত্রাসী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। এতে তাঁর ছেলে সহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এব্যাপারে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, নিহত জাহিদুলের বাবা থানায় হাজির হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। আমরা মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছি। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহত হওয়া দুঃখজনক জানিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, আমরা চেয়েছিলাম ছাত্রদের ন্যয্য দাবী প্রতিষ্ঠিত হোক। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সুযোগ সন্ধানীরা যেন পাবনায় কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারে। ৩ আগষ্ট থেকে সুযোগসন্ধানী ছাত্র শিবিরকর্মীরা ছাত্রদের মধ্যে প্রবেশ করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। আমরা জানতে পারি তারা ছাত্রদের লাশ চায়। ৪ আগষ্ট পরিকল্পিত নাশকতা করতে ছাত্রশিবির কর্মীরা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সামনে থেকে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করে মধ্য শহরে নিয়ে আসে। তারা ছাত্রদের উত্তেজিত করে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় শহিদ বুলবুল কলেজ সড়ক ও থানা সড়কে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুই ছাত্র নিহত হয়। এরপর প্রায় তিন ঘন্টা পর ছাত্র জনতাকে উত্তেজিত করে সশস্ত্র শিবির কর্মীরা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশও নেতাকর্মীদের রক্ষায় ব্যার্থ হয়। পরে আত্মরক্ষায় দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁদের লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ট্যাগ :
জনপ্রিয়

আমি কুমিল্লার মানুষের হৃদয়ে নাম লিখতে চাই : নবাগত জেলা প্রশাসক

পাবনায় আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আওয়ামীলীগ সভাপতি সম্পাদকসহ ১০৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা

প্রকাশিত : ০৮:৪২:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪
পাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিবর্ষণে দুই ছাত্র নিহত হবার ঘটনায় ভাঁড়ারা ইউনিয়নের আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে নিহত পাবনা পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিটিউটের ছাত্র জাহিদুল ইসলামে (১৮) বাবা মো. দুলাল উদ্দিন বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলী।
মামলায় পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, পৌর মেয়র শরিফ উদ্দিন সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ ১০৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ার নির্দেশ দেবার অভিযোগে আবু সাইদ খানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এজাহার বলছে, ঘটনার দিন ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল। এ সময় মামলার অভিযুক্ত আসামীরা লোহার রড, বাঁশের লাঠি ও দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে। বিনা উস্কানিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এতে ছাত্র জনতা ভয়ে দিকবিদিক ছুটতে থাকে। এ সময় তাঁর ছেলে জাহিদুলসহ ছাত্ররা আন্দোলনরত অবস্থায় ছিলো। এর এক পর্যায়ে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদের নির্দেশে প্রকশ্যে দুজন সহ একদল সন্ত্রাসী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। এতে তাঁর ছেলে সহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এব্যাপারে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, নিহত জাহিদুলের বাবা থানায় হাজির হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। আমরা মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছি। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহত হওয়া দুঃখজনক জানিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, আমরা চেয়েছিলাম ছাত্রদের ন্যয্য দাবী প্রতিষ্ঠিত হোক। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সুযোগ সন্ধানীরা যেন পাবনায় কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারে। ৩ আগষ্ট থেকে সুযোগসন্ধানী ছাত্র শিবিরকর্মীরা ছাত্রদের মধ্যে প্রবেশ করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। আমরা জানতে পারি তারা ছাত্রদের লাশ চায়। ৪ আগষ্ট পরিকল্পিত নাশকতা করতে ছাত্রশিবির কর্মীরা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সামনে থেকে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করে মধ্য শহরে নিয়ে আসে। তারা ছাত্রদের উত্তেজিত করে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় শহিদ বুলবুল কলেজ সড়ক ও থানা সড়কে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুই ছাত্র নিহত হয়। এরপর প্রায় তিন ঘন্টা পর ছাত্র জনতাকে উত্তেজিত করে সশস্ত্র শিবির কর্মীরা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশও নেতাকর্মীদের রক্ষায় ব্যার্থ হয়। পরে আত্মরক্ষায় দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁদের লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।