কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বড় ঘাপটিয়া গ্রামে ঘটে যাওয়া মা, ছেলে ও বাবাসহ ট্রিপল হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সকালে গ্রামের মৃত মাহমুদ হোসেন (৩৫), তার স্ত্রী মায়মুনা (৩০) এবং তাদের শিশু সন্তান সাইমনকে (৯) নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাদের নিজ বাড়িতে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত মাহমুদার পিতা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে, কুমিল্লা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হোমনা থানার চরেরগাঁও এলাকা থেকে আসামি মো, আক্তার হোসেন সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।
৮ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় জেলা পুলিশ সুপার মো. আসফিকুজ্জামান আকতার।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত মাহমুদা আক্তার ও আসামি আক্তার হোসেন সুমনের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। উক্ত সম্পর্কের ভিত্তিতে নিহত মাহমুদা আক্তার মাঝে মাঝে আসামির কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। ঘটনার কিছুদিন আগে মাহমুদা আসামির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার চায়। আসামি পূর্বের ধারের ৩৫ হাজার টাকা না পেয়ে নতুন করে ধারের টাকা না দেওয়ায় মাহমুদা আসামির মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে আসামির মনে প্রচণ্ড রাগ ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে আসামি ধারের টাকা নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে আসতে বললে আসামি আক্তার হোসেন সুমন ঐ দিন রাত ৯টায় মাহমুদার ঘরে যায়। আসামি আক্তার, মাহমুদা, মাহমুদার ছেলে সাহাদ এবং মাহমুদার ফুফাতো ভাশুরের মেয়ে তৃষা সকালে গিয়ে পেঁয়াজু, সিঙ্গারা ও আখ খেয়ে রাতে সাহাদ ও তৃষা ঘুমিয়ে যায়। এসময়ে আসামি মাহমুদার কাছে পুনরায় ধারের টাকা ফেরত চাইলে সে আবার আসামির মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে।
মাহমুদা আসামি আক্তারকে সকালে টাকা দিবে বলে রাতে তার বাড়িতেই থাকতে বলে। মাহমুদা ঘুমিয়ে পড়লে আসামি তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরে রাত্রে মাহমুদাকে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে। পরবর্তীতে কোনো প্রমাণ না রাখার উদ্দেশ্যে সাহাদ ও তৃষাকেও ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করে। আসামি তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে খাটের নিচে থাকা কাঠের ফাইল দিয়ে ৩ জনের মাথায় পিটিয়ে গুরুতর জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
বিজনেস বাংলাদেশ/ডিএস