১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি: ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ

অধ্যাপক কামরুন নাহার

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং একজন অভিভাবকের ফোনালাপের একাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফাঁস হয়েছে। ওই ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলোচনার ঝড় শুরু হয়।

ফোনালাপের সময় অধ্যক্ষ কামরুন নাহার কথা বলার একপর্যায়ে অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপুকে বলেন, ‘আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। কোনও … বাচ্চা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগবো, আমি শুধু ভিকারুননিসা না, আমি দেশছাড়া করবো।’
পুরো ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের খণ্ডিত অডিওতে অভিভাবক টিপু ঠান্ডা মাথায় কথা বললেও অধ্যক্ষ ছিলেন উত্তেজিত। তবে কেন কী কারণে অধ্যক্ষ উত্তেজিত তা ফোনালাপে স্পষ্ট নয়। ফোনালাপের প্রথম অংশও অডিওতে নেই।

অডিও ফাঁস করার কথা স্বীকার করে অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপু বলেন, ‘সম্প্রতি প্রায় ৪০ জনের মতো অভিভাবককে নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের দাবির কথা বলতে গিয়েছিলাম। তিনি বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে বিদায় করেছেন। আমিও তাকে বলে এসেছি ৩০ তারিখের মধ্যে অভিভাবকদের কাজগুলো করে দিতে হবে। করোনা বিপর্যস্ত অভিভাবকদের টিউশন ফি মওকুফের জন্য গিয়েছিলাম। তিনি তা করেননি। এসব কারণে ফোনালাপের অডিও ফাঁস করে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মীর সাহাবুদ্দিন টিপু।

ফোনালাপের প্রথম অংশ নেই, তাহলে অডিও এডিট করা কিনা জানতে চাইলে মীর সাহাবুদ্দিন টিপু বলেন, ‘পুরো ফোনালাপটা আপনাকে দিতে পারবো।’

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুন নাহার বলেন, ‘সুপার এডিট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফোনালাপের একাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন জানিয়েছিল। আমি ভর্তি করাইনি। করোনার মধ্যে প্রায় ৪০ জন অভিভাবক নিয়ে এসে তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। আমি করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে অফিসে দেখা করতে বলেছিলাম। আমাকে অভিভাবক টিপু আল্টিমেটাম দিয়ে চলে যান। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ে শিক্ষা প্রকৌশলকে লিখিত দিয়েছিলাম। সেটির তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ভর্তি বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণের কারণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এসব কারণে আমারে সরিয়ে দিতে তারা পরিকল্পনা করেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’

অধ্যক্ষ বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন অর্ধেক করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি (টিপু)। গভর্নিং বডির সদস্যদের কেউ কেউ শিক্ষকদের অসম্মান করেন। এসব প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন।’

অধ্যক্ষের সঙ্গে অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর মধ্যে চলা ওই কথোপকথনে কামরুন নাহার বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে আমি অফিস করি কি না করি কার বাপের কী? আমি রাজনীতি করা মেয়ে, আমি কিন্তু ভদ্র না।

কামরুন নাহার ফোনালাপে আরও বলেন, ‘আমি বলে দিলাম, আমি শিক্ষক। আমি প্রিন্সিপাল। ওই … পোলা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু তার গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়বো।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে অভিভাবক ফোরামের পক্ষে উপদেষ্টা মীর সাহাবুদ্দিন টিপু এবং সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার রানার স্বাক্ষরে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুরোধ জানানো হয়। প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য করা আবেদনে বলা হয়, ‘গভর্নিং বডির সদস্যদের আত্মীয়-স্বজনদের কিছু অনুরোধ আছে।’

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

বিল্ডিং এ ডিজাবিলিটি ইনক্লুসিভ ওয়ার্কফোর্স শীর্ষক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত

আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি: ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ

প্রকাশিত : ০৮:৩১:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুলাই ২০২১

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং একজন অভিভাবকের ফোনালাপের একাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ফাঁস হয়েছে। ওই ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলোচনার ঝড় শুরু হয়।

ফোনালাপের সময় অধ্যক্ষ কামরুন নাহার কথা বলার একপর্যায়ে অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপুকে বলেন, ‘আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। কোনও … বাচ্চা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগবো, আমি শুধু ভিকারুননিসা না, আমি দেশছাড়া করবো।’
পুরো ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের খণ্ডিত অডিওতে অভিভাবক টিপু ঠান্ডা মাথায় কথা বললেও অধ্যক্ষ ছিলেন উত্তেজিত। তবে কেন কী কারণে অধ্যক্ষ উত্তেজিত তা ফোনালাপে স্পষ্ট নয়। ফোনালাপের প্রথম অংশও অডিওতে নেই।

অডিও ফাঁস করার কথা স্বীকার করে অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপু বলেন, ‘সম্প্রতি প্রায় ৪০ জনের মতো অভিভাবককে নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের দাবির কথা বলতে গিয়েছিলাম। তিনি বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে বিদায় করেছেন। আমিও তাকে বলে এসেছি ৩০ তারিখের মধ্যে অভিভাবকদের কাজগুলো করে দিতে হবে। করোনা বিপর্যস্ত অভিভাবকদের টিউশন ফি মওকুফের জন্য গিয়েছিলাম। তিনি তা করেননি। এসব কারণে ফোনালাপের অডিও ফাঁস করে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মীর সাহাবুদ্দিন টিপু।

ফোনালাপের প্রথম অংশ নেই, তাহলে অডিও এডিট করা কিনা জানতে চাইলে মীর সাহাবুদ্দিন টিপু বলেন, ‘পুরো ফোনালাপটা আপনাকে দিতে পারবো।’

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুন নাহার বলেন, ‘সুপার এডিট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফোনালাপের একাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। অভিভাবক মীর সাহাবুদ্দিন টিপু শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন জানিয়েছিল। আমি ভর্তি করাইনি। করোনার মধ্যে প্রায় ৪০ জন অভিভাবক নিয়ে এসে তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। আমি করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে অফিসে দেখা করতে বলেছিলাম। আমাকে অভিভাবক টিপু আল্টিমেটাম দিয়ে চলে যান। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ে শিক্ষা প্রকৌশলকে লিখিত দিয়েছিলাম। সেটির তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ভর্তি বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণের কারণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এসব কারণে আমারে সরিয়ে দিতে তারা পরিকল্পনা করেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’

অধ্যক্ষ বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন অর্ধেক করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি (টিপু)। গভর্নিং বডির সদস্যদের কেউ কেউ শিক্ষকদের অসম্মান করেন। এসব প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন।’

অধ্যক্ষের সঙ্গে অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর মধ্যে চলা ওই কথোপকথনে কামরুন নাহার বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে আমি অফিস করি কি না করি কার বাপের কী? আমি রাজনীতি করা মেয়ে, আমি কিন্তু ভদ্র না।

কামরুন নাহার ফোনালাপে আরও বলেন, ‘আমি বলে দিলাম, আমি শিক্ষক। আমি প্রিন্সিপাল। ওই … পোলা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু তার গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়বো।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে অভিভাবক ফোরামের পক্ষে উপদেষ্টা মীর সাহাবুদ্দিন টিপু এবং সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার রানার স্বাক্ষরে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুরোধ জানানো হয়। প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য করা আবেদনে বলা হয়, ‘গভর্নিং বডির সদস্যদের আত্মীয়-স্বজনদের কিছু অনুরোধ আছে।’

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ