০৯:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র চিত্রগ্রাহরক আনোয়ার হোসেন আর নেই

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত চিত্রগাহক আনোয়ার হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেরে বাংলা থানার উপ পরিদর্শক এস আই তপন কুমার।

শনিবার সকালে এটি রেস্টুরেন্ট থেকে তার আনোয়ার হোসেনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে জানালেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন,‘ তার মৃত্যুর কারণ খোঁজা হচ্ছে।’

১৯৪৮ সালের ৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার আগানবাব দেউড়িতে আনোয়ার হোসেনের জন্ম। বর্তমানে যেখানে তাজমহল সিনেমা হল, ঠিক তার পেছনে। বেড়ার সব ঘর, তার মধ্য দিয়ে চলে গেছে সরু গলি। এতটাই সরু যে, দুজন লোক একসঙ্গে সাইকেলে যেতে পারে না। এখানেই কেটেছে আনোয়ার হোসেনের শৈশব।

তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকলেও পড়ালেখার প্রতি আনোয়ার হোসেনের এতটাই টান ছিল যে, প্রতিদিন ভোর চারটায় পড়তে বসতেন।

সকাল হয়ে এলে পাড়ার ছেলেরা হাজির হতো। তাদের সাথে হাফ প্যান্ট পরে উদোম গায়ে খালি পায়ে হাটে যেতেন বস্তা নিয়ে। সেখানে গাছ চেরা ছোট টুকরো সংগ্রহ করতেন তিনি। সেগুলো বস্তাপ্রতি আট-নয় আনায় বিক্রি হতো। সেখান থেকে ফিরে বাজার করতেন, তারপর যেতেন স্কুলে। স্কুলে বরাবর প্রথম হলেও খাতায় তার নাম থাকতো না; যদিও বিভিন্ন বৃত্তি থেকে টাকা পেতেন তিনি, কিন্তু তা সংসারের প্রয়োজনেই ব্যয় হয়ে যেতো।

স্কুলে একবার বিশেষ পোশাক সাদা শার্ট পরে যেতে বলা হলে বিব্রত হলেন, পরে প্রধান শিক্ষককে তার বাবা বলে কয়ে তা থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। স্কুল থেকে ফিরে বাড়ির টুকটাক কাজ করতেন। সন্ধ্যা হলে পাড়ার বন্ধু সেলিম, দ্বীন ইসলাম, পাশা সবাই মিলে উঠোনে চৌকিতে গোল হয়ে বসতেন, এতে এক হারিকেনেই চলতো তাদের। এভাবেই কঠিন দারিদ্র্যের মাঝে শৈশব কাটিয়ে উঠেছিলেন এই আলোকচিত্রী।

বিবি/রেআ

ট্যাগ :

বরিশালে পেশাদার সাংবাদিকদের ৩৫ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়

‘সূর্য দীঘল বাড়ি’র চিত্রগ্রাহরক আনোয়ার হোসেন আর নেই

প্রকাশিত : ০২:৫৯:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত চিত্রগাহক আনোয়ার হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেরে বাংলা থানার উপ পরিদর্শক এস আই তপন কুমার।

শনিবার সকালে এটি রেস্টুরেন্ট থেকে তার আনোয়ার হোসেনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে জানালেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন,‘ তার মৃত্যুর কারণ খোঁজা হচ্ছে।’

১৯৪৮ সালের ৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার আগানবাব দেউড়িতে আনোয়ার হোসেনের জন্ম। বর্তমানে যেখানে তাজমহল সিনেমা হল, ঠিক তার পেছনে। বেড়ার সব ঘর, তার মধ্য দিয়ে চলে গেছে সরু গলি। এতটাই সরু যে, দুজন লোক একসঙ্গে সাইকেলে যেতে পারে না। এখানেই কেটেছে আনোয়ার হোসেনের শৈশব।

তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকলেও পড়ালেখার প্রতি আনোয়ার হোসেনের এতটাই টান ছিল যে, প্রতিদিন ভোর চারটায় পড়তে বসতেন।

সকাল হয়ে এলে পাড়ার ছেলেরা হাজির হতো। তাদের সাথে হাফ প্যান্ট পরে উদোম গায়ে খালি পায়ে হাটে যেতেন বস্তা নিয়ে। সেখানে গাছ চেরা ছোট টুকরো সংগ্রহ করতেন তিনি। সেগুলো বস্তাপ্রতি আট-নয় আনায় বিক্রি হতো। সেখান থেকে ফিরে বাজার করতেন, তারপর যেতেন স্কুলে। স্কুলে বরাবর প্রথম হলেও খাতায় তার নাম থাকতো না; যদিও বিভিন্ন বৃত্তি থেকে টাকা পেতেন তিনি, কিন্তু তা সংসারের প্রয়োজনেই ব্যয় হয়ে যেতো।

স্কুলে একবার বিশেষ পোশাক সাদা শার্ট পরে যেতে বলা হলে বিব্রত হলেন, পরে প্রধান শিক্ষককে তার বাবা বলে কয়ে তা থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। স্কুল থেকে ফিরে বাড়ির টুকটাক কাজ করতেন। সন্ধ্যা হলে পাড়ার বন্ধু সেলিম, দ্বীন ইসলাম, পাশা সবাই মিলে উঠোনে চৌকিতে গোল হয়ে বসতেন, এতে এক হারিকেনেই চলতো তাদের। এভাবেই কঠিন দারিদ্র্যের মাঝে শৈশব কাটিয়ে উঠেছিলেন এই আলোকচিত্রী।

বিবি/রেআ