০১:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

পুলিশকে আইনের রক্ষকের ভূমিকায় চাই: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের আইনের রক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চাই বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশকে আমি সব সময় আইনের রক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চাই। দেশের প্রচলিত আইন, সততা এবং নৈতিক মূল্যবোধই হবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথ নির্দেশক।

সোমবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান তিনি।

পুলিশ সদস্যের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে, সফলতার জন্য আপনারা যেমন পুরস্কৃত হবেন, তেমনি প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, আমি আশা করি প্রতিটি পুলিশ সদস্য অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন এবং সাহায্যের হাত বাড়াবেন। জাতির পিতা আপনাদের বলেছেন, আপনারা স্বাধীন দেশের পুলিশ। জনগণের প্রতি আপনাদের কর্তব্য অপরিসীম। তাই আপনাদের নিজেদেরকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ‘আইজিপি কমপ্লেইন সেল’ স্থাপন করা হয়েছে যা পুলিশ সদস্যদের পেশাগত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তিনি দেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যত সমৃদ্ধ হবে, দেশকে আমরা তত উন্নত করে করে তুলতে সক্ষম হব। লাখো শহীদের রত্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশকে ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্তভাবে গড়ে তুলবো। কারো কাছে হাত পেতে নয়, মাথা নত করে নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। নিজেদের সম্পদ দিয়ে নিজেদের দেশকে গড়তে চাই। যেন বিশ্বসভায় আমরা যেন সবসময় মাথা উঁচু করে চলতে পারি। সেকথা মনে রেখে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করেছি- ২০২১ সালে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হব আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। এই বাংলাদেশকে আমরা সেভাবেই প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

শেখ হাসিনা দৃপ্ত কন্ঠে বলেন, ইনশাল্লাহ ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো। ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলে। কাজেই সেজন্য সকলকে একত্রে তিনি দেশগড়ার কাছে আত্মনিবেদন করার আহবান জানান।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহ ২০১৮ উপলক্ষে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন এবং একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। সুপারিনটেন্ডেন্ট অব পুলিশ মহসিন হোসেন প্যারেড পরিচালনা করেন। ‘জঙ্গিবাদ মাদকের প্রতিকার বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী সকালে রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক এবং স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন তাকে স্বাগত জানান। মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, জাতীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, কূটনিতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ১৮২ জনকে চারটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পুলিশ পদক সাহসিকতা, রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সাহসিকতা, বাংলাদেশ পুলিশ পদক সেবা ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সেবা প্রদান করেন।

এর মধ্যে মরণোত্তর বাংলাদেশ পুলিশ পদক সাহসিকতা’র জন্য সিলেটের আঁতিয়া মহলে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত লে.কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ, ইন্সপেক্টর মো. মনিরুল ইসলাম এবং ইন্সপেক্টর কায়সরের পক্ষে তাদের সহধর্মিনীরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে এই পদক গ্রহণ করেন।

>>‘সাহসী’ ও ‘মানবসেবী’ পদক পেলেন ১৮২ পুলিশ

জনপ্রিয়

পুলিশকে আইনের রক্ষকের ভূমিকায় চাই: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০২:৩৬:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০১৮

বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের আইনের রক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চাই বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশকে আমি সব সময় আইনের রক্ষকের ভূমিকায় দেখতে চাই। দেশের প্রচলিত আইন, সততা এবং নৈতিক মূল্যবোধই হবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথ নির্দেশক।

সোমবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান তিনি।

পুলিশ সদস্যের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে, সফলতার জন্য আপনারা যেমন পুরস্কৃত হবেন, তেমনি প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, আমি আশা করি প্রতিটি পুলিশ সদস্য অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন এবং সাহায্যের হাত বাড়াবেন। জাতির পিতা আপনাদের বলেছেন, আপনারা স্বাধীন দেশের পুলিশ। জনগণের প্রতি আপনাদের কর্তব্য অপরিসীম। তাই আপনাদের নিজেদেরকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ‘আইজিপি কমপ্লেইন সেল’ স্থাপন করা হয়েছে যা পুলিশ সদস্যদের পেশাগত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তিনি দেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যত সমৃদ্ধ হবে, দেশকে আমরা তত উন্নত করে করে তুলতে সক্ষম হব। লাখো শহীদের রত্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশকে ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্তভাবে গড়ে তুলবো। কারো কাছে হাত পেতে নয়, মাথা নত করে নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। নিজেদের সম্পদ দিয়ে নিজেদের দেশকে গড়তে চাই। যেন বিশ্বসভায় আমরা যেন সবসময় মাথা উঁচু করে চলতে পারি। সেকথা মনে রেখে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করেছি- ২০২১ সালে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হব আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। এই বাংলাদেশকে আমরা সেভাবেই প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

শেখ হাসিনা দৃপ্ত কন্ঠে বলেন, ইনশাল্লাহ ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো। ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলে। কাজেই সেজন্য সকলকে একত্রে তিনি দেশগড়ার কাছে আত্মনিবেদন করার আহবান জানান।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহ ২০১৮ উপলক্ষে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন এবং একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। সুপারিনটেন্ডেন্ট অব পুলিশ মহসিন হোসেন প্যারেড পরিচালনা করেন। ‘জঙ্গিবাদ মাদকের প্রতিকার বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী সকালে রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক এবং স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন তাকে স্বাগত জানান। মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, জাতীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, কূটনিতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ১৮২ জনকে চারটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পুলিশ পদক সাহসিকতা, রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সাহসিকতা, বাংলাদেশ পুলিশ পদক সেবা ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সেবা প্রদান করেন।

এর মধ্যে মরণোত্তর বাংলাদেশ পুলিশ পদক সাহসিকতা’র জন্য সিলেটের আঁতিয়া মহলে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নিহত লে.কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ, ইন্সপেক্টর মো. মনিরুল ইসলাম এবং ইন্সপেক্টর কায়সরের পক্ষে তাদের সহধর্মিনীরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে এই পদক গ্রহণ করেন।

>>‘সাহসী’ ও ‘মানবসেবী’ পদক পেলেন ১৮২ পুলিশ