১০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিজিবি’র মতো সাজবে কোস্টগাড

ক্রমাগতভাবে কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) মতো কোস্টগার্ডকে সাজানো হচ্ছে। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্টগার্ড সদর দফতরে কোস্টগার্ডের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোস্টগার্ডের সফলতা অনেক। কোস্টগার্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোস্টগার্ডের পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী অন্যান্য বাহিনীকেও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বাহিনীর সদস্যরা যাতে দ্রুত দুর্গম পাহাড়ি ও উপকূল এলাকায় পৌঁছাতে পারে সেজন্য রাস্তা নির্মাণ, হেলিকপ্টার দেয়া ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। এসব কাজ শেষ হলে সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক আসা বন্ধ হবে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নৌবাহিনীর সদস্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। কিন্তু এখন প্রবিধান প্রনয়ণের মাধ্যমে নিজস্ব আইনে জনবল নিয়োগ করা হবে। এর মাধ্যমে কোস্টগার্ডকে স্বতন্ত্র বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে সরকার বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বর্তমানে কোস্টগার্ডে ৪ হাজার সদস্য দায়িত্বপালন করছেন। কোস্টগার্ডে নিজস্ব জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এটি শুরু হলে কোস্টগার্ডের নিজস্ব সদস্য থাকবে যারা স্থায়ীভাবে বাহিনীতে থেকে সেবা দিয়ে যেতে পারবেন। পাশাপাশি এ বাহিনীতে অভিজ্ঞ জনবলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালে বিরোধী দলে থাকাকালীন কোস্টগার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি সংসদে এ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করেন, যার ফলশ্রুতিতে কোস্টগার্ডের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র একটি জাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করা কোস্টগার্ড এখন বিশাল বহরে পরিণত হয়েছে। পটুয়াখালীতে একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ বাহিনীটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, কোস্টগার্ডে চারটি অস্ত্র ভ্যাসেল সংযুক্ত করা হয়েছে। আরও চারটি অস্ত্র ভ্যাসেল যুক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বাহিনীটিতে এয়ার উইং সংযোজন করা হবে। সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে আধুনিকায়ন করা হবে। মাদকের চোরাচালান রোধে করণীয় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক চোরাচালান রোধে আমরা মোটেও ব্যর্থ না। স্থলসীমান্তে বিজিবি কাজ করছে, কিন্তু এমন কিছু স্থলসীমা আছে যেখানে বিজিবির একটি বিওপি থেকে আরেক বিওপিতে যেতে ২ দিন সময় লেগে যায়। আমরা সেসব এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ করছি। এছাড়া, বিজিবিতে হেলিকপ্টার যুক্ত করা হয়েছে। কোস্টগার্ডও উপকূলীয় এলাকায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করছে। সকলের প্রচেষ্টায় মাদক অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি, আশা করছি আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। এর আগে সকালে বাহিনীটির ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের ৪০ জন সদস্যকে পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী এ বাহিনীর সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে সমুদ্র বাণিজ্য ও উপকূলীয় জনগণের নিরাপত্তা বিধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এ বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সরকার বদ্ধপরিকর। খুব শিগগিরই যুক্ত হবে অত্যাধুনিক অফশোর প্যাট্রল ভেসেল (ওপিভি), হোভারক্রাফ্ট ও অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন জলযান। এ সকল জলযান দ্বারা এ বাহিনী অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন করে দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধনে তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন বেইজ, স্টেশান ও আউটপোস্টে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে এ বাহিনীর পরিপূর্ণ বিকাশ সুনিশ্চিত করা হবে। কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুযোগ্য ও যুগপোযোগী দিক নির্দেশনার ফলে এ বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর সদস্যগণ দেশ প্রেমের চেতনা সমুন্নত রেখে তাদের অটুট মনোবল, নিরলস কর্মস্পৃহা ও কঠোর প্ররিশ্রমের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প ২০৩০ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে মর্মে অঙ্গিকার ব্যক্ত করছি। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, কেস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ালল এডমিরাল এম আশরাফুল হকসসহ অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

বিজিবি’র মতো সাজবে কোস্টগাড

প্রকাশিত : ১২:০১:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ক্রমাগতভাবে কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) মতো কোস্টগার্ডকে সাজানো হচ্ছে। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কোস্টগার্ড সদর দফতরে কোস্টগার্ডের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোস্টগার্ডের সফলতা অনেক। কোস্টগার্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোস্টগার্ডের পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী অন্যান্য বাহিনীকেও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বাহিনীর সদস্যরা যাতে দ্রুত দুর্গম পাহাড়ি ও উপকূল এলাকায় পৌঁছাতে পারে সেজন্য রাস্তা নির্মাণ, হেলিকপ্টার দেয়া ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে। এসব কাজ শেষ হলে সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক আসা বন্ধ হবে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নৌবাহিনীর সদস্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। কিন্তু এখন প্রবিধান প্রনয়ণের মাধ্যমে নিজস্ব আইনে জনবল নিয়োগ করা হবে। এর মাধ্যমে কোস্টগার্ডকে স্বতন্ত্র বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে সরকার বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বর্তমানে কোস্টগার্ডে ৪ হাজার সদস্য দায়িত্বপালন করছেন। কোস্টগার্ডে নিজস্ব জনবল নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এটি শুরু হলে কোস্টগার্ডের নিজস্ব সদস্য থাকবে যারা স্থায়ীভাবে বাহিনীতে থেকে সেবা দিয়ে যেতে পারবেন। পাশাপাশি এ বাহিনীতে অভিজ্ঞ জনবলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কোস্টগার্ডের আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালে বিরোধী দলে থাকাকালীন কোস্টগার্ডের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি সংসদে এ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করেন, যার ফলশ্রুতিতে কোস্টগার্ডের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র একটি জাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করা কোস্টগার্ড এখন বিশাল বহরে পরিণত হয়েছে। পটুয়াখালীতে একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ বাহিনীটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, কোস্টগার্ডে চারটি অস্ত্র ভ্যাসেল সংযুক্ত করা হয়েছে। আরও চারটি অস্ত্র ভ্যাসেল যুক্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বাহিনীটিতে এয়ার উইং সংযোজন করা হবে। সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে আধুনিকায়ন করা হবে। মাদকের চোরাচালান রোধে করণীয় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক চোরাচালান রোধে আমরা মোটেও ব্যর্থ না। স্থলসীমান্তে বিজিবি কাজ করছে, কিন্তু এমন কিছু স্থলসীমা আছে যেখানে বিজিবির একটি বিওপি থেকে আরেক বিওপিতে যেতে ২ দিন সময় লেগে যায়। আমরা সেসব এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ করছি। এছাড়া, বিজিবিতে হেলিকপ্টার যুক্ত করা হয়েছে। কোস্টগার্ডও উপকূলীয় এলাকায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করছে। সকলের প্রচেষ্টায় মাদক অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি, আশা করছি আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। এর আগে সকালে বাহিনীটির ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের ৪০ জন সদস্যকে পদক প্রদান করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী এ বাহিনীর সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে সমুদ্র বাণিজ্য ও উপকূলীয় জনগণের নিরাপত্তা বিধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এ বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সরকার বদ্ধপরিকর। খুব শিগগিরই যুক্ত হবে অত্যাধুনিক অফশোর প্যাট্রল ভেসেল (ওপিভি), হোভারক্রাফ্ট ও অন্যান্য উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন জলযান। এ সকল জলযান দ্বারা এ বাহিনী অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন করে দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধনে তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন বেইজ, স্টেশান ও আউটপোস্টে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে এ বাহিনীর পরিপূর্ণ বিকাশ সুনিশ্চিত করা হবে। কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এম আশরাফুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুযোগ্য ও যুগপোযোগী দিক নির্দেশনার ফলে এ বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর সদস্যগণ দেশ প্রেমের চেতনা সমুন্নত রেখে তাদের অটুট মনোবল, নিরলস কর্মস্পৃহা ও কঠোর প্ররিশ্রমের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প ২০৩০ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে মর্মে অঙ্গিকার ব্যক্ত করছি। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, কেস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ালল এডমিরাল এম আশরাফুল হকসসহ অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।