সাতক্ষীরার উপকূলীয় আশাশুনি এবং শ্যামনগর উপজেলা সংলগ্ন কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া ও চুনা নদীতে প্রবল জোয়ারের কারণে বেড়িবাঁধে ব্যাপক ফাটল ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। চরম ঝুঁকিতে পড়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১ ও ২ এর আওতায় প্রায় ১৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।ইতিমধ্যে নদীর প্রবল জোয়ারে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পশ্চিম দূর্গাবাটি ও দাঁতনেখালি খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে দূর্গাবাটি এবং দাঁতনেখালি গ্রাম প্লাবিত হয়।
অপরদিকে আশাশুনি উপজেলা সদরের দয়ারঘাট এলাকাসহ মোট ৫টি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভেঙে ৩টি গ্রামসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সহস্রাধিক চিংড়ি ঘের ও ছোট-বড় পুকুর ভেসে যায়। কয়েক হাজার বসতবাড়ি, খাল-বিল এবং ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে আছে। চরম দুর্ভোগে পড়ে এলাকাবাসী।
শুক্রবার ভেঙে যাওয়া এলাকা কপোতাক্ষ নদের দয়ারঘাট স্পটটি বলিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে কোনোরকমে সংস্কার করা হয়। এছাড়া শ্যামনগরের খোলপেটুয়া নদীর পশ্চিম দূর্গাবাটি ও দাঁতনেখালি বাঁধে জিও ব্যাগ ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করা হলেও সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার। ফলে দিনে কমপক্ষে দুইবার জোয়ারের লোনা পানি ঢুকছে লোকালয়ে।সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর তথ্যমতে, আশাশুনি উপজেলাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর আওতায় ৭/১, ৭/২ ও পোল্ডার ৪ এর আওতায় মোট ৪২৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে স্থানভেদে ৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তথা ভেঙে যায়।
আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য বারবার তাগিত দেয়া হচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের। ২৯ মার্চ কপোতাক্ষ নদের প্রবল জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরম ঝুঁকিতে থাকা আশাশুনি উপজেলা সদরের দয়ারঘাট ও জেলেখালী এলাকা মুহূর্তের মধ্যে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়।
‘এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আশাশুনি সদরের খোলপেটুয়া নদীর দয়ারঘাট, জেলেখালী, বলাবাড়ীয়া প্রতাপনগর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, শুভাদাকাটি, হিজরাকুলা ও হরিষখালী, আনুলিয়া ইউনিয়নের মনিপুর, বিছট, খাজরা বাজার ও শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী, গরালি এবং বড়দলের কেয়ারগাঁতি এলাকা।’
চেয়ারম্যান মোস্তাকিম জানান, অচিরেই এসব বাঁধ সংস্কার করা না হলে এই বর্ষা মৌসুমের মধ্যেই নদীর প্রবল জোয়ারে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হবে লোকালয়। ভেসে যাবে কোটি কোটি টাকার চিংড়ি ঘের।এছাড়া বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট ক্যাম্পের সামনে থেকে বুড়িগোয়ালীনি বাজার পর্যন্ত এবং মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে মৌখালী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার বাঁধে ভাঙন ও ব্যাপক ফাটল রয়েছে। আগামি বর্ষা মৌসুমের আগে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো সংস্কার করা না হলে সুন্দরবন ঘেঁষা আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বসবাসরত প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বে। ফলে এখন থেকেই নদী ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে দেশের সর্বদক্ষিণের জনপদের মানুষ।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, পাওবো-১ এর অধীনে সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এ চারটি উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ফণী ও আম্পান পরবর্তী ২ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাঁধ সংস্ক





















